পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা এবং প্রত্যাহার পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। এই আবহে জেলায় জেলায় বহু আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সেই পরিসংখ্যান গতকালই প্রকাশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে গতকাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে এমনিতে রাজ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এবারে ২২টি জেলার মোটি ৬৩২২৯টি আসনের মধ্যে ৬২৩৮টি, ৯৭৩০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৫৯টি এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের মধ্যে ৮টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। (আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের কটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতয় জয়ী প্রার্থীরা? জানিয়ে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন)
উল্লেখ্য, এবার মনোনয়ন পর্বে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙর। সেখানে মুড়িমুড়র মতো বোমা পড়েছে। রক্ত ঝরেছে। মানুষের প্রাণ গিয়েছে। পুলিশ সেভাবে কিছুই করতে পারেনি। এই আবহে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশিত না হওয়ায় আলোড়ন ছড়িয়েছে বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের জন্য কারচুপি করছেন সরকারি আধিকারিকরাই। হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বহিরা গ্রাম পঞ্চায়েতসহ বেশ কয়েক পঞ্চায়েতে এই কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ। এই আবহে হাই কোর্টে মামলা হয়। এই আবহে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অবৈধভাবে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়টি খতিয়ে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে সিবিআইকে।
অপরদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তথ্য প্রকাশ না করা হলেও কমিশন জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার ৪,৫৩৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের মধ্যে ৮৬৭টি, ৫৯৩টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১০৪টি, ৬৬টি জেলা পরিষদের মধ্যে ৩টি আসনে ভোট হবে না। নদিয়ার ৪,০১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬৩টি, ৫৪৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৫টি আসনে ভোট হবে না। হাওড়ার ৩,১০২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের মধ্যে ৭১৭টি, ৪৭০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৯৮টি আসনে ভোট হবে না। এছাড়া এবার হুগলির ৩,৮৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের মধ্যে ৩৯৮টি, ৬১৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৫৮টিতে ভোট হবে না। এছাড়া রাজ্যের বাকি জেলার পরিসংখ্যানও প্রকাশ করেছে কমিশন।
এদিকে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মোট ৬,৮৪৮ জন তৃণমূল প্রার্থী নাম প্রত্যাহার করেছেন। বিজেপির ৫,৫৫২ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। সিপিআইএমের ২,৯৯০ জন, কংগ্রেসের ১,৮২৬ জন প্রার্থী নাম তুলেছেন। এছাড়াও ফরওয়ার্ড ব্লকের ১০৬ জন প্রার্থীও নাম প্রত্যাহাকর করেছেন। আপের তিন জন, বিএসপির ১৩ জন, এনপিপর পাঁচজনও নাম তুলেছেন নির্বাচন থেকে। এছাড়া ২৬৮০ জন নির্দল প্রার্থী এবং অন্যান্য দলের আরও ৫৭২ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।