গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি রাজ্যে ধরাশায়ী হলেও মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক বজায় রাখতে পেরেছিল। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ধস নামল বিজেপির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বুথেই হেরে গেল বিজেপি। সেখানে ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, নবজোয়ার কর্মসূচিতে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি বাধা দেওয়ার কারণে তিনি মূল মন্দিরে পুজো দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল। তারপরেই তিনি বলেছিলেন, মতুয়ারা এর জবাব দেবেন ভোটবাক্সে। ঠিক তেমনটাই ঘটল।
আরও পড়ুন: গণনাকেন্দ্রে ঢুকে বিরোধীদের মারধর করার অভিযোগ, বিধায়ক লাভলি এখন ভিলেন
শুধুমাত্র উত্তর পরগনা এবং নদিয়াতেই নয়, অন্যান্য এলাকাতে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কে বিজেপির ধস নেমেছে। এরপরে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। যদিও এই হারকে জালিয়াতি বলেই দাবি করেছে বিজেপি। তবে তৃণমূল পালটা এই হারকে অভিষেককে অপমানের যোগ্য জবাব বলে দাবি করেছে।
বিজেপির বনগাঁ সংগঠনিক নেতৃত্ব তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল রাতের অন্ধকারে জাল ব্যালট ছাপিয়ে বিজেপিকে হারিয়েছে। ব্যালট বাক্স থেকে পদ্মফুলে ছাপ দেওয়া ব্যালট পেপার শৌচালয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণেই তৃণমূল জয়ী হয়েছে। অন্যদিকে, শান্তনু ঠাকুরের দাবি, ২০১৮ সালে বিজেপির পঞ্চায়েতের ভোটে যে ফল হয়েছিল, তার থেকে এবার ভালো ফল হয়েছে। তবে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের থেকে ফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। কিন্তু মতুয়ারা বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁর দাবি, সিপিএম অনেকটাই ভোট কেটেছে। সেই কারণে তৃণমূলের ফল ভালো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মতুয়া ভোটের জোরেই ২০২১ সালে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম, চাকদা, হরিণঘাটা এবং কল্যাণী বিধানসভা তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে উলটো ফল হল।
পালটা বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘নবজোয়ার যাত্রার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হেনস্থা করা হয়েছিল। তার জবাব দিয়েছে মতুয়ারা। এটাই হওয়ার ছিল।’ সেখানে পঞ্চায়েতের সার্বিক ফল প্রকাশ হলেই বোঝা যাবে, ওই এলাকা পুনরুদ্ধারে কারা কতটা সফল।