নিয়োগ দুর্নীতি, নেতাদের জেল, ইডি–সিবিআইয়ের তৎপরতা থেকে শুরু করে রাজ্যে বিজেপির অপপ্রচার এবং বারবার আদালতে মামলা করার পরও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলার বেশিরভাগ জেলা পরিষদ দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতেও এমন আবহ দেখা গিয়েছিল। আজ, বুধবার জেলা পরিষদে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস শক্তিবৃদ্ধি করল। ৫৬টি জেলা পরিষদে তারা জয় পেয়েছে। বিরোধীরা জিতেছে ১৪টি আসনে। এখনও বাকিগুলির গণনা চলছে।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেস দখল করার জেরে শুভেন্দুর উপর চাপ বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে ৭০ আসনের জেলা পরিষদের মধ্যে বেশিরভাগ আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের দুটি জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তার মধ্যে একটি ছিল পূর্ব মেদিনীপুর। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে পরাজিত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তার মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরে এমন সাফল্য চাপ বাড়াল বিরোধী দলনেতার বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এই জেলা–সহ রাজ্যের সমস্ত জায়গায় শুভেন্দু অধিকারী প্রচার করেন। আর তৃণমূল কংগ্রেসকে তোলামূল পার্টি থেকে শুরু করে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে সরব হন। তারপরও তাঁর গড়ে এভাবেই সাফল্য পেল তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জবাবদিহি করতে হতে পারে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে। ভোট ক্রমশ কমছে কেন? এটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কাঁথি এবং এগরা মহকুমার ১৩টি ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি এখন তৃণমূল কংগ্রেসেরই দখলে। কাঁথি মহকুমার আটটি ব্লক ও এগরা মহকুমার পাঁচটি ব্লকের বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত পেয়েছে তৃণমূল। তবে বিজেপিও বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত পেয়েছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমস্ত জেলা পরিষদই তৃণমূলের দখলে, গ্রাম পঞ্চায়েতেও জয়
আর কী জানা যাচ্ছে? এছাড়া কাঁথি–৩ ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটি বিজেপি এবং পাঁচটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে এসেছে। ভাজাচাউলি, লাউদা, কুসুমপুর, কুমীরদা এবং কানাইদিঘি তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে। আর দেবেন্দ্র, দুরমুঠ এবং মারিশদা বিজেপির কাছে গিয়েছে। কাঁথি–১ ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটি বিজেপির দখলে এসেছে। সাবাজপুট এবং রাইপুর–পশ্চিমবাড় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে গিয়েছে। রামনগর–১ ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮টি পেয়েছে তৃণমূল। তালগাছাড়ি–২ বিজেপি পেয়েছে। রামনগর–২ ব্লকের পালধুই, সটিলাপুর, এবং বাদলপুর পঞ্চায়েত বিজেপি পয়েছে। বাকিগুলি সব দখল করেছে তৃণমূল। আর ভগবানপুর–২ ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে দুটি বিজেপি পেয়েছে (ইটাবেড়িয়া ও মুগবেড়িয়া)। বাকি সাতটির মধ্যে ৬টি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। এগরা–১ ব্লকের ৮টির মধ্যে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। বাকিগুলি তৃণমূলের দখলে। এগরা–২ ব্লকের দেশবন্ধু, বাথুয়াড়ি, পানিপারুল, দুবদা ও বাসুদেবপুরে তৃণমূল জয়ী হয়েছে। দুটি বিজেপির দখলে।