রাত থেকেই অশান্ত ভাঙড়। জেলা পরিষদের ভোট গণনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় গণনা কেন্দ্রে। এই আবহে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে আইএসএফ কর্মীদের। রাতে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে এলাকায়। পালটা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে পুলিশও। এরই মাঝে জখম হন পুলিশের আধিকারিকরাও। আর এবার আইএসএফ-এর তরফে দাবি করা হল, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের এক কর্মীর। মৃতের নাম হাসান আলি, বয়স ২৬ বছর। কলকাতার আরজি কর হাসপালে নাকি তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে গতরাতের হিংসায়। তাদের একজনের নাম রাজু মোল্লা। অপরজনের নাম নিজামুল গাজি। এই নিজামুলও আইএসএফ কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। (পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল সংক্রান্ত যাবতীয় খবর এবং লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
এদিকে হাসানের মৃত্যু প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ হাসানকে কয়েক জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি আক্রমণ করে। সেই হামলায় হাসানের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভাঙড়-২ ব্লকের কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রে চলছিল জেলা পরিষদের ভোটগণনা। অভিযোগ, আইএসএফ-এর জেলা পরিষদের প্রার্থী জাহানারা খাতুন প্রথমে পাঁচ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। তবে পরে জানানো হয়, তৃণমূল প্রার্থীর কাছে ৩৬০ ভোটে হেরে গিয়েছেন তিনি। এরপরই ফের গণনার দাবি ওঠে। পরে পুনর্নির্বাচনের দাবি ওঠে। এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর বিস্ফোরণের আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। উত্তেজিত আইএসএফ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রবার গুলি ছোড় পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। এদিকে গণনাকেন্দ্রে এই বোমাবাজির জন্য আটকে পড়েন আরাবুল ইসলাম এবং তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম।
এদিকে এই সংঘর্ষের মাঝে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও তাঁর দেহরক্ষী। দু’জনেরই অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এই আবহে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ আরও কয়েকজন আধিকারিক ভাঙড়ে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন আজ। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। হিংসার ঘটনায় এখনও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তদন্ত ও তল্লাশি চলছে।
উল্লেখ্য, ভাঙড়ে ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে এসেছে ১৮টি। আইএসএফ এবং জমিরক্ষা কমিটির জোট পেয়েছে একটি। আরাবুলের নিজের গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। এদিকে জেলা পরিষদের আসনে তৃণমূলকে কড়া টক্কর দিচ্ছিলেন আইএসএফ প্রার্থী। প্রসঙ্গত, মনোনয়ন পর্ব থেকেই ভাঙড় অশান্ত। একাধিক আইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে এখানে। রাজ্যপাল একাধিকবার এসেছেন এই ভাঙড়ে। তবে ভাঙড় থেকেছে ভাঙড়েই।