রাত পোহালেই লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হবে। আর তার ঠিক আগেই আবেগঘন বক্তব্য রাখলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। আর তাঁর এই বক্তব্যে এখন তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। কংগ্রেসকে জেতাতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেন তিনি। নিজের জেলা কালাবুর্গিতে এসে মানুষের সামনে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেন। আর যদি তিনি মানুষের জন্য কাজ করে থাকেন, আর মানুষ তা বিশ্বাস করে থাকেন, তাহলে তাঁর শেষকৃত্যে যেন আসেন। এমনকী কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট যদি নাও দেন লোকসভা নির্বাচনে। খাড়গের গলায় এমন সুর দেখে মানুষজনও আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। আসলে ৮১ বছরের এই নেতা বোঝাতে চেয়েছেন, মানুষ যদি কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তিনি মনে করবেন কালাবুর্গিতে আর তাঁর কোনও জায়গা নেই।
এদিকে ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে কালাবুর্গি থেকে বারবার জিতে এসেছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। কিন্তু ২০১৯ সালে এখান থেকেই পরাজিত হন কংগ্রেস সভাপতি। তাই এবার আর সেটার পুনরাবৃত্তি চান না তিনি। এই কারণে মল্লিকার্জুন খাড়গে কালাবুর্গিতে দাঁড়িয়ে জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘কংগ্রেস প্রার্থীকে যদি ভোট না দেন, যদি মনে করেন আমি কিছু কাজ করেছি, তাহলে অন্তত আমার শেষকৃত্যে আসবেন। এবার যদি আপনারা ভোট মিস করেন তাহলে আমি মনে করব আমার কোনও জায়গা নেই এখানে। আর আমি আপনাদের হৃদয় জিততে পারিনি।’ নিজের জেলা কালাবুর্গিতে এসে এমনই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কর্নাটকের গুলবর্গা আসনে এবার প্রার্থী হননি খাড়গে।
আরও পড়ুন: ক্যানসার আক্রান্ত তরুণ ৬ বার ঘুরলেন এসএসকেএম হাসপাতালে, তারপর ঠিক কী মিলল?
অন্যদিকে এবার এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন খাড়গের জামাই রামকৃষ্ণ ডোড্ডামনি। আর বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন উমেশ যাদব। আর নিজের জামাইয়ের হয়ে আফজলপুরে প্রচারে আসেন কংগ্রেস সভাপতি। তখনই বক্তব্য রাখার সময় খাড়গে বলেন, ‘যদি এবারও আপনারা ভোট না দেন, তাহলে বুঝব আমার এখানে কোনও জায়গা নেই। আমি আপনাদের হৃদয় জিততে পারিনি। আপনারা কংগ্রেসকে ভোট দিন বা না দিন, যদি আপনারা মনে করেন কালাবুর্গির জন্য আমি কিছু করেছি, তাহলে অন্তত আমার শেষকৃত্যে আসবেন।’
এছাড়া খাড়গে রাজনীতিতে নিজের দায়বন্ধতার কথা তুলে ধরেন। বিজেপি এবং আরএসএস যে নীতি নিয়ে চলে তার বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও বুধবারের সভা থেকে জানান। তাঁর কথায়, ‘আমি রাজনীতির জন্য জন্মেছি। আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি অথবা করছি না সেটা বড় ব্যাপার নয়। আমি লড়াই চালিয়ে যাব দেশের সংবিধান এবং গণতন্ত্রকে বাঁচাতে শেষ নিঃশ্বাস না বেরনো পর্যন্ত। অবসরের অর্থ কোনও পদ থেকে সরে যাওয়া। কিন্তু আদর্শ থেকে সরে যাওয়া যায় না। আমি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছি না। আমি সিদ্দারামাইয়াকে বারবার বলেছি, আপনি মুখ্যমন্ত্রী বা বিধায়ক পদ থেকে অবসর নিতেই পারেন, কিন্তু রাজনীতি থেকে অবসর নিতে পারেন না। যতক্ষণ না আরএসএস–বিজেপির আদর্শ পরাজিত হচ্ছে।’