'ঠ্যালায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না- চলতি প্রবাদটা যেন হাওড়া স্টেশনের অ্যাপ ক্যাবের জন্য সত্যি হয়ে উঠেছে। কারণ গত মার্চে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের (গ্রিন লাইন) হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হওয়ার পরেই অ্যাপ ক্যাবের কপাল পুড়েছে। যাত্রীর সংখ্যা কমে গিয়েছে। চাহিদা-জোগানের স্বাভাবিক নিয়মে কমে গিয়েছে অ্যাপ ক্যাবের ভাড়াও। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তো আগে যা ভাড়া ছিল, তার ৪০ শতাংশও কমে গিয়েছে ভাড়া। অ্যাপ ক্যাবের চালকদের আশঙ্কা, সেই পুরনো দিন ফিরে আসবে না আর। বরং হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পুরো অংশে মেট্রোর বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু আরও চাপ বাড়বে তাঁদের। সেই পরিস্থিতিতে যে অংশে মেট্রোর সংযোগ নেই, সেগুলিকে ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে।
ভাড়ার আকাশ-পাতাল তফাৎ
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রো চালু হলে বাস, ট্যাক্সির মতো বিভিন্ন পরিবহণের মাধ্যম যে ধাক্কা খাবে, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ মেট্রোর ভাড়া কম। স্বাচ্ছন্দ্যও বেশি। হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাত্রীরা অনায়াসে হাওড়া মেট্রো স্টেশনে ঢুকে যেতে পারেন। সেখান থেকে একটা মেট্রো ধরে মাত্র ১০ টাকায় এসপ্ল্যানেড চলে আসতে পারেন। সেখান থেকে আবার নর্থ-সাউথ করিডরের (ব্লু লাইন) মেট্রো ধরে দক্ষিণেশ্বরের দিকে বা নিউ গড়িয়ার যেতে পারবেন। ফলে মেরেকেটে ৫০ টাকার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারছেন।
সেখানে অ্যাপ ক্যাব হলে হাওড়া স্টেশন থেকে নিউ গড়িয়া যেতে ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ টাকা। একইভাবে হাওড়া থেকে রাসবিহারী আসতে ৫০০ টাকার মতো পড়বে। শ্যামবাজারে যেতে খরচ পড়বে ২০০ টাকার মতো। যেটা মেট্রোয় করে এলে একেবারে সস্তায় হয়ে যাবে। আগে যেমন হাওড়া থেকে এসপ্ল্যানেডে আসতে ২৫০ টাকা মতো খরচ পড়ত। এখন সেটা কমে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, অ্যাপ ক্যাবে এসি চালানো নিয়েও অনেক বিতর্ক হয়। যাত্রীরা হামেশাই অভিযোগ তোলেন যে এসি চালাতে বেঁকে বসেন চালকরা। মেট্রোয় সেইসব কোনও সমস্যা নেই। প্রবল গরমের মধ্যেই এসির হাওয়া খেতে-খেতে গন্তব্যে যেতে পারছেন যাত্রীরা।
অ্যাপ ক্যাবের চালকদের বক্তব্য, যাত্রীদের কাছে দু'একটি বড় লাগেজ থাকে। তাহলেও মেট্রো বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। নিত্যযাত্রীরা তো মেট্রোর পথেই হাঁটছেন। একমাত্র প্রচুর ব্যাগপত্তর থাকলে তবেই রেলযাত্রীরা অ্য়াপ ক্য়াবের পথে হাঁটছেন বলে দাবি করেছেন অ্যাপ ক্যাবের চালকরা।