বাইরে তখন ঠা ঠা পোড়া রোদ। দাবদাহে গলদঘর্ম অবস্থা হয়ে পড়েছে রাজ্যবাসী। এই গরমে অনেকেই বাড়ির থেকে বের হচ্ছেন না। অথচ লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হতে চলেছে ২৬ এপ্রিল। এমন আবহে ভরদুপুরে প্রচণ্ড গরমে আলিমুদ্দিনে এসে থামল উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। যা দেখে সবাই স্তম্ভিত। কিন্তু কেন লাল বাড়িতে গেরুয়া নেতা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গাড়ি থেকে নেমে সটান ঢুকে গেলেন মজফ্ফর আহমেদ ভবনে। দেখা করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে।
এদিকে এই সাক্ষাৎ দেখে নানা রাজনৈতিক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে ঠিক ঘড়ি ধরে ১০ মিনিট বিমান বসুর সঙ্গে কথা বলেন তাপস রায়। বিজেপির উত্তর কলকাতার তাপস রায়কে আর্শীবাদ করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বিমান বসু। তাঁর সুস্থতাও কামনা করেন। তবে তাপসবাবুকে সরাসরি বিমান বসু জানিয়ে দেন, ওই আসনে বামেদের সমর্থনে প্রার্থী আছে। এই সাক্ষাৎ নিয়ে তাই স্বাভাবিকভাবেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দুপুর ৩টের পর বিমান বসুর কাছে যান তাপস রায়। উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর নাম প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাই সেই আসনে বামেরা আপস করতে পারবে না। তাপস রায়ও সেই আর্জি নিয়ে যাননি।
আরও পড়ুন: আবার প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে বিপত্তি ঘটল, বন্ধ হয়ে পড়ে বর্ধমান–হাওড়া ট্রেন চলাচল
অন্যদিকে তাপস রায় কেন গেলেন আলিমুদ্দিনে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আগে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে বামেদের ভোটব্যাঙ্ক রামেদের কাছে ট্রান্সফার হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তাই আবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিমান বসুর আশীর্বাদ চাইতে যাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাপস রায়ের সঙ্গে ছিলেন উত্তর কলকাতার বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তমোঘ্ন রায়–সহ অন্যান্য নেতারা। একদা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসা তাপস রায় লড়াই করেছিলেন সিপিএমের বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিপিএম বিরোধী কথাও বলেছিলেন। সেখানে আজ সোমবার সিপিএমের সদর দফতরে গিয়ে আশীর্বাদ নেওয়া কার্যত বেমানান।
এখন তাপস রায় তৃণমূল কংগ্রেসে নেই। বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপির টিকিটে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাপস রায়। তার মধ্যেই এই সাক্ষাৎ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এই দেখা করে বেরিয়ে আসার পর তাপস রায় বলেন, ‘বিমান বসু তাঁর কেন্দ্রের একজন ভোটার। সুতরাং ভোটারের কাছে প্রার্থী আসবে সেটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। নিষ্ঠাবান মানুষ বলেই এদিন আর্শীবাদ নিতে এসেছি।’ আর বিমান বসু বলেন, ‘আমার কাছে উনি এসেছিলেন। আমি আর্শীবাদ করেছি। আর জানিয়েছি, আমাদের ওখানে প্রার্থী রয়েছে। আমরা সেখানে লড়াই করছি।’