লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা আর তিনদিন পরই শুরু হবে। তার আগে নানারকম সমীক্ষা সংবাদমাধ্যম দেখাতে শুরু করেছে। এই আবহে এবার এসএসসি মামলায় সোমবার বড় রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার পর রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। তাতে প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষক–শিক্ষিকা থেকে অশিক্ষক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। আর এই রায়ের পর বিরোধীরা বেশ অক্সিজেন পেয়েছে। এবার বিজেপির আসন সংখ্যা বাংলায় কত হবে? সেটাই আগাম জানিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ উত্তর দিনাজপুরের সভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপিকে তুলোধনা করেন। একইসঙ্গে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসএসসি মামলার রায় নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে রাজ্য সরকার। চাকরি প্রার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষক–শিক্ষিকারা ও পড়ুয়ারা চিন্তা করবেন না। যখন বিপদে পড়বেন আর কেউ না থাকলেও আমি আছি। আর একটা কথা বলি। আরও দশ লক্ষ সরকারি চাকরি রেডি আছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে। এটা ওই বিজেপির হাতে দাঁড়ানো জজের কীর্তি। এই একটা হয়েছে না মন্দির, না মসজিদ। বিজেপির বিচারালয়। অন্য লোকে পিল করলে, দেবে তাকে কিল। আর বিজেপি পিল করলে ব্যস। বিজেপি পিল করলে বেল। আর অন্য কেউ করলে জেল। এই তো এখানকার অবস্থা।’
আরও পড়ুন: বিমান বসুর দ্বারে গেলেন তাপস রায়, ভরদুপুরের প্রবল গরমে দুই নেতার কী কথা হল?
এই কথা বলার সময়ই তিনি বুঝতে পারেন বিজেপি এটা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে। ভোটের রাজনীতি করবে। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করেছেন, লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে অন্তত পক্ষে ৩০টি আসন জিতবে। আর তারই পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘৩০টা সিট পাওয়ার আশা করছে। আগে ১০টা সিট পেয়ে দেখাক। আমরা তোমাদের চোখ রাঙানিকে ভয় পেলে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দিতাম। আমরাই একমাত্র বিজেপিকে সরাতে পারি। এটা বিচারপতিদের দোষ নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের দোষ। তারা বিজেপির লোক দেখে এখানে বসিয়েছেন। বিজেপি পার্টি অফিস থেকে যা বলে দেয় তাঁরা সেই ড্রাফট করে দেয়।’
তবে এখানে তিনি থেমে থাকেননি। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ইন্ডিয়া জোট জিতলে দিল্লিতে সমর্থন করব। বাংলায় কোনও জোট নেই। আর আমি সম্পূর্ণ রায়কে চ্যালেঞ্জ করছি। আমি বিচারক নিয়ে বলছি না। আমি রায় নিয়ে বলছি। এই অর্ডার বেআইনি। আমরা এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি। যখন বিপদে পড়বেন, তখন আর কেউ না থাকলে আমি থাকব। পাশে আছি। বিজেপি জনস্বার্থ করলে জেল। আমি কারও পাশ থেকে সরে দাঁড়াব না। কী করবেন? আমায় সাজা দেবেন? মানহানির মামলা করবেন? আমি তৈরি। জেলে পাঠাবেন আমি তৈরি। মানুষের কথা বলার জন্য আমি মাথা পেতে শাস্তি নেব।’