কংগ্রেস আর বামেদের মধ্যে আসন সমঝোতা বা জোট নিয়ে এখন যা অবস্থা তাতে জোট ভেস্তে যেতে পারে। কারণ রাজ্যের আরও তিনটি লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস। আর তাতেই তিক্ত হতে বসেছে দু’পক্ষের। বামফ্রন্টের শরিক দলের জন্য নির্দিষ্ট আসন ছেড়ে রাখা হয়েছিল। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়ে দিল। এই নিয়েই এখন বাড়ল জটিলতা। ইতিমধ্যেই ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর। তাই পুরুলিয়া কেন্দ্রে পৃথক প্রার্থী দিতে চলেছে নেতাজির দল।
বামফ্রন্ট এখনও পর্যন্ত ২৯টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বনগাঁ কেন্দ্রে প্রদীপ বিশ্বাস, উলুবেড়িয়ায় প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি আজহার মল্লিক এবং ঘাটাল আসনে পাপিয়া চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা করেছে। সব মিলিয়ে ১৩টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে দুদিন আগেই বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সিপিআই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে তিনটি আসনে বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হল না। কোচবিহার, পুরুলিয়া তো আছেই। এমনকী ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সভাস্থলে নিয়ে আসা হয় ঝড়ে বিপর্যস্ত পরিবারের সদস্যদের, মোদী সাক্ষাৎ অধরা, হতাশ
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি আসনে এখনও বাম–কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি। জয়নগরে আরএসপি প্রার্থী দেয়। আর মথুরাপুরে লড়তে আগ্রহী কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে সিপিএম শনিবারই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তাতে সব হিসাব গোলমাল হয়ে গিয়েছে। তাই পাল্টা কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করতে শুরু করেছে। সুতরাং জোট ঘোঁটে পরিণত হচ্ছে। আর এমন চলতে থাকলে জোট ভেঙে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘাটাল নিয়ে এখন যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সিপিআই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এবং সিপিএমকে জানিয়ে দিয়েছে। এই বিষয়ে সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পল্লব সেনগুপ্ত বলেন, ‘এআইসিসি যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে ঘাটাল আসন আছে। এটা সত্যিই খুব অনভিপ্রেত। এখনও যদি কংগ্রেস সংশোধন না করে, তা হলে আমাদের ভাবতে হবে।’
এছাড়া সিপিআইয়ের আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় সিপিএম অসন্তুষ্ট। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন। তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। অধীররঞ্জন চৌধুরী নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিপিএম চাইলে জোট ভেঙে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কংগ্রেস আরও কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিলে চতুর্মুখী লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হবে। এই অবস্থায় এআইসিসি’র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর এবং স্ক্রিনিং কমিটির নেতা রানা কেপি সিংয়ের আজ, সোমবার বিধান ভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে।