জলপাইগুড়িতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর নয়াদিল্লি থেকে টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি কর্মীদের বিপদে পড়া মানুষের পাশে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে বলেছিলেন। কিন্তু সেভাবে বিজেপি নেতা–কর্মীদের দেখা যায়নি। বরং রাতে তড়িঘড়ি সেখানে পৌঁছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত পরিবারের কয়েকজন প্রতিনিধিকে এনেও মোদীর মঞ্চে ওঠাতে পারল না বিজেপি। সুতরাং ঝড় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে জবাব দেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি তা ভেস্তে গেল।
এদিকে আগের সভায় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি তাই এবার পরিকল্পনা করেছিল টর্ণেডোর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারের প্রতিনিধিদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করিয়ে বাজিমাত করবে। তাই ময়নাগুড়ি থেকে কয়েকজনকে ধূপগুড়িতে আনা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। যদিও তাঁদের অনেকের সঙ্গেই কোনও পরিচয়পত্র ছিল না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ের ঘেরাটোপ পেরিয়ে তাঁদের যেতে দেওয়া হয়নি। এই খবর পেয়ে বিজেপিকে বিঁধেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ‘আর একজন বিষ্ণুপুর, জানি না ডিভোর্স হয়েছে কি না’, সৌমিত্রকে খোঁচা মমতার
অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ের ভোটগ্রহণ। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবার জলপাইগুড়ির সভা শুরুতেই ঝড়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘কদিন আগেই জলপাইগুড়ির অনেক জায়গায় ঝড়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁদের সমবেদনা জানাই। আমি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’ আর যাঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলাতে সেটা না হওয়ায় বিকল্প পথ হিসাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কথা বলানো হয় তাঁদের। এই সভা শেষে সুকান্ত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে হঠাৎ করে আমরা জরুরি কর্মসূচি দিইনি। আমি ও আমাদের দল ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।’
এই পরিস্থিতি নিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। এবার পুরুলিয়ায় নির্বাচনী জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে পাঁচ হাজার মানুষের বাড়ি নষ্ট হয়েছে। আমরা বাংলার বাড়ি করে দিতে চাই। নির্বাচন চলছে বলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হয়। এখনও অনুমতি মেলেনি।’ তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানো হবে বলে যাঁদের আনা হয়েছিল তাঁরা হতাশ হয়ে পড়লেন। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গিয়েছেন সমর রায়। তাঁর ছেলে নারায়ণ রায়ের এসেছিলেন সভাস্থলেই। এই বিষয়ে নারায়ণ রায় বলেন, ‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদীকে দেখলাম। কথা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আশা ছিল।’