সন্দেশখালি কাণ্ডের সময় শেখ শাহজাহান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ যাঁরা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা এবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। আর বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করে দিয়েছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এটাই সবচেয়ে বড় মাস্টারস্ট্রোক। তবে তাঁকে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় অগ্রাহ্য করার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এমনকী এই ভূমিকন্যার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল সন্দেশখালি বিধানসভা কেন্দ্রে। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসকে দোষ দিচ্ছে বিজেপি। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এদিকে রবিবার বাংলার জন্য দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। বসিরহাট কেন্দ্রে যে মহিলাকে প্রার্থী করা হয়েছে তিনি হলেন রেখা পাত্র। যিনি সন্দেশখালির কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। থানায় গিয়ে এফআইআর দায়ের পর্যন্ত করেন। লিখিত অভিযোগে নির্যাতিতার নাম লেখা থাকলেও সেটা প্রকাশ্যে আনেনি পুলিশ। তবে বিজেপি প্রার্থী তালিকায় রেখার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আজ, সোমবার থেকেই রেখার নামে পোস্টার পড়তে দেখা গিয়েছে সন্দেশখালি, পাত্রপাড়া এবং ত্রিমোহিনী এলাকায়। পোস্টারে লেখা, ‘বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রেখা পাত্রকে চাইছি না। সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মানুষরা রেখা পাত্রকে চায় না।’
আরও পড়ুন: বাম–কংগ্রেস একাধিক আসনে সমঝোতা অধরা, কংগ্রেসের মনোভাবে উষ্মা বামেদের
সুতরাং লোকসভা নির্বাচনে প্রাক্কালে দোলের দিন সরগরম হয়ে উঠেছে সন্দেশখালি। এদিকে কোনও নির্যাতিতার নাম কোনওভাবেই প্রকাশ্যে আনা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন রয়েছে। সেখানে রবিবার রাতে বিজেপি যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বসিরহাট কেন্দ্রে তার কিছু ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে নানা জায়গায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মহিলা সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে সরাসরি নিজের নাম বলছেন এবং অত্যাচারের কথা বলছেন। বিতর্কের মধ্যে যে পোস্টার পড়েছে তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ নেই বলে দাবি করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘এই পোস্টার আমাদের দলের থেকে কেউ দেয়নি। রাজনীতি করার জন্য তৃণমূল এসব করছে।’
অন্যদিকে এমন একজন মহিলাকে কেমন করে প্রার্থী করল বিজেপি? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আসলে রেখা পাত্রের নাম–ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বিজেপির ব্যাখ্যা, বসিরহাটের প্রার্থী নির্যাতিতা মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদী মুখ হয়ে উঠেছেন। তাই প্রার্থী হলে নাম–ছবি প্রকাশ্যে তো আসবেই। কিন্তু এই বিতর্ক বাড়বে আগামীদিনে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সন্দেশখালির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘সন্দেশখালিতে যাঁরা এত দিন ধরে বিজেপি করলেন, তাঁরা জানেন, বিজেপি এই আন্দোলনটা কাদের দিয়ে করিয়েছিল। আর যাঁদের দিয়ে আন্দোলন করিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে থেকেই প্রার্থী করেছে। সেই ক্ষোভের বহিপ্রকাশ এই পোস্টার।’