প্রার্থী পছন্দ নয়। দলের মধ্যে তুমুল মতানৈক্য। এই নিয়েই এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমেছে বিজেপি। আসলে বিজেপির যাঁরা প্রকৃত কর্মী তাঁদের প্রার্থী করা হয়নি বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে এবার অনাস্থা জানিয়ে ‘নোটা’ বোতাম টিপতে আবেদন জানাল ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চ। বৃহস্পতিবার ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চ কলকাতায় একটি সভা করে। এদিন চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হলেন তাঁরা। ইডি, সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম রয়েছে। তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কেন শুভেন্দুকে নেতা মানতে হবে? উঠেছে প্রশ্ন।
এবার দিলীপ ঘোষকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান–দুর্গাপুরে আনা হয়েছে। দেবশ্রী চৌধুরীকে রায়গঞ্জ থেকে সরিয়ে দক্ষিণ কলকাতায় আনা হয়েছে। আসানসোলে প্রার্থী করা হয়েছে এসএস আলুয়ালিয়াকে। কাঁথিতে শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দুকে প্রার্থী করা হয়েছে। এমন নানা পরিবর্তন করা হয়েছে। শুভেন্দুকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক দীপক সরকার বলেন, ‘আমার ঘরে চোর পুষে অপরের ঘরের চোর তাড়াব! সেটাকে কোন নৈতিকতা বলে? হেমন্ত সোরেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো মুখ্যমন্ত্রীদের জেল হলে তাঁদের থেকেও বেশি অপরাধী শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? একুশের নির্বাচনের মতো চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও ভুল প্রার্থীদের মনোনীত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘আমি চাই হুগলির মানুষও মেট্রো পরিষেবা পাক’, প্রচারে বেরিয়ে নয়া প্রস্তাব লকেটের
বিজেপি দলটা নব্য ও তৎকালের হাতে চলে গিয়েছে বলে সরব হন এই মঞ্চের সদস্যরা। এই মঞ্চের সদস্য তথা আদি বিজেপি নেতা–কর্মীরা প্রতিবাদ পত্র ছাপিয়ে সেখানে নানা বিষয়ে বঙ্গ–বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন। নিশানা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও। ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে, দলের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ কেন? বিজেপি কর্মীদের দ্বারা দল পরিচালনা হচ্ছে না কেন? লোকসভা নির্বাচনে ভুল প্রার্থী মনোনীত করা হল কাদের স্বার্থে? অযোগ্য, অপরাধী, আয়ারাম–গয়ারাম ব্যক্তিদের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করার উদ্দেশ্য কী? নিজের ঘরে চোর পুষে, অপরের ঘরের চোর তাড়ানো কি শোভা পায়? এভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে এদিন ‘বিবেক ভোট’ দেওয়ার ডাক দেওয়া হয়। বিজেপির আদর্শ বাঁচাতে জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পোস্টার দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে জেতান বলেও আহ্বান করা হয়েছে। দমদমে শীলভদ্র দত্ত, বরানগরে সজল ঘোষদের মতো শুভেন্দুর চাপিয়ে দেওয়া এবং বহিরাগতদের প্রার্থী করা হয়েছে বলে কদিন আগে পোস্টারও দিয়েছিল ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’। এদিন সভা থেকে বিদ্রোহীরা জানিয়ে দেন, দল তাঁরা ছাড়বেন না। বাংলায় বিজেপিকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী দেওয়া হবে।