লোকসভা নির্বাচন গোটা দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসক–বিরোধী সবপক্ষই জোরদার প্রচার শুরু করেছে। এই আবহে এবার মালদা লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাজোলের মহাবিদ্যালয়ের মাঠে জনসভা করে মালদা উত্তরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আহ্বান করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা থেকে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুকে নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মালদায় তৃতীয় দফা অর্থাৎ আগামী ৭ মে ভোটগ্রহণ হবে। এখান থেকে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বড় কথা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ গাজোলে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারে ঝড় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। কড়া আক্রমণ শানালেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সুর চড়ালেন কংগ্রেস–সিপিএমের বিরুদ্ধেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রসূনকে ভোটটা দিয়ে দেখুন। ও এখানে আপনাদের জন্য পড়ে থাকবে। আপনাদের কথা বলবে। ওকে ভোট দিয়ে দেখুন। আমার আর এক প্রার্থী আছেন শাহনওয়াজ ভাই। ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নামী ছাত্র। সব ছেড়ে এখানে এসেছেন মালদার মানুষকে ভালবেসে। বিজেপির যাঁরা এখান থেকে জিতেছিল, কংগ্রেসের যাঁরা জিতেছিল কোনওদিন বাংলার হয়ে কথা বলেছে? শুনেছেন? বাংলার হয়ে দাবি আদায় করেছে? জেনে রাখবেন বাংলায় কংগ্রেস–সিপিএম–বিজেপি ভাই ভাই। তাই লড়ছে একসঙ্গে। আমরা লড়ছি আমরা একা বিজেপির সঙ্গে।’
আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেস রাজপুত্রের জন্য খুঁজতে হবে আরও একটি নিরাপদ আসন’, রাহুলকে কটাক্ষ মোদীর
এদিকে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুকে সরাসরি নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্র থেকেই জিতেছিলেন খগেন মুর্মু। বিজেপির টিকিটে জিতে কোনও কাজ করেননি বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারেও তাঁর উপর ভরসা রেখেছে বিজেপি। আজ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘খগেনবাবু, আপনাকে ভোট দিতাম যদি আপনি বাংলার হয়ে আওয়াজ তুলতেন। কেন ১০০ দিনের কাজ বন্ধ? কেন সংসদে প্রশ্ন তোলেননি? আপনি কোথায় ছিলেন? কংগ্রেস কোথায় ছিল? দিল্লিতে সরকার গড়ব আমরা। তখন আমরা ইন্ডিয়া জোটকে সাপোর্ট করব। বাংলায় নয়। ইন্ডিয়া জোট আমি তৈরি করেছিলাম। মনে রাখবেন সিপিএম–কংগ্রেসকে একটাও ভোট দেবেন না। এটা বিজেপির খেলা।’
অন্যদিকে সিএএ, এনআরসি এবং ১০০ দিনের টাকা দেয়নি বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরাও ভোট দিয়ে যাবেন। যাতে দুষ্টুমি করে আপনাদের নাম বাদ দিতে না পারে। আমি কথা দিচ্ছি, সিএএ, এনআরসি এখানে করতে দেব না। এটা হলে সকলে পরিচয়, নাগরিকত্ব হারাবেন। মাছ, মাংস, ডিম খেতে বারণ করছে ওরা। কে কী খাবে সেটা তাদের নিজের ব্যাপার। কেন ধমকাবেন আপনারা? ১০০ দিনের কাজের টাকা ওরা দেয়নি। আটকে রেখেছে। কিন্তু বাংলা ভিক্ষা চাইবে না। যত বেশি সাংসদ আমরা নেব, তত বেশি দিল্লি থেকে কাজ করতে পারব। বাংলার প্রাপ্য আদায় করব। কোনও সমীক্ষা বিশ্বাস করবেন না। সব বিজেপি টাকা দিয়ে করিয়েছে। বিধানসভায় ২০০টি আসন পাবে বলেছিল। পায়নি। এবারও পাবে না। আমাদের এমপি পার্লামেন্টে লড়াই করেছে। মার খেয়েছে। মহুয়াকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু ওরা মাথা নত করেনি।’