কারও নাম করলেন না। তবে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপের ফ্ল্যাটে আয়কর দফতরের তল্লাশি অভিযান নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিন ধরে স্বরূপের ফ্ল্যাটে আয়কর দফতরের আধিকারিকদের তল্লাশি অভিযানের সময় তৃণমূল নেতা স্বরূপ ও তাঁর পরিবারকে কী কী 'কষ্ট' পেতে হয়েছে, তাও জানান তিনি। সেইসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে মমতা প্রশ্ন করেন যে গেরুয়া শিবির যদি লোকসভা নির্বাচনে ৪০০টি আসন জয়ের বিষয়ে এতটাই নিশ্চিত থাকে, তাহলে কেন ভোটের মুখে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই, আয়কর দফতর অভিযান চালানো হচ্ছে?
রবিবার মমতা সেই প্রশ্নটা তোলেন কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়া সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাব মাঠের জনসভা থেকে। স্বরূপের নাম না করেই তিনি বলেন, 'আমাদের যারা ভোট করে, তাদের বাড়িতে রোজ এনআইএ চলে যাচ্ছে। সিবিআই চলে যাচ্ছে। ইডি চলে যাচ্ছে। আমি একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, তার বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্স রেড করতে গিয়েছিল। আমি বললাম যে তিনদিন ধরে ওরা কী করল তোদের বাড়িতে? (ও বলল যে) দিদি আর বলবেন না, আমার তিনটে বাচ্চা। তিনদিন ধরে আমরা বাথরুমে যেতে পারিনি। আমরা রান্না করতে পারিনি। আমার বাচ্চাটা কীভাবে স্নান করবে, জানি না।'
মমতা বলেন, ‘একটা বাড়িতে তিনদিন ধরে বসে আছে ১৬ জন গিয়ে। যেখানে মহিলারা আছে, বাচ্চারা আছে। গিয়ে এক-একটা খাবার বিল আনছে ২০,০০০ টাকা, ২৫,০০০ টাকা করে। কিন্তু সেই বাড়ির লোকটা খেয়েছে কিনা, সেই বাড়ির বাচ্চাটা খেয়েছে কিনা, সেটা দেখার প্রয়োজন নেই।’
আর কেন্দ্রীয় সংস্থার সেই অভিযান নিয়ে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে আক্রমণ শানান মমতা। তিনি বলেন, ‘বিজেপি পার্টি যদি এমনিই আপনারা জেতেন, (তাহলে কেন ইডি, সিবিআই পাঠাচ্ছেন?) বলছে যে ৪০০-র বেশি আসন পাবে। তাহলে কেন সিবিআই, তাহলে কেন ইডি, তাহলে কেন ইনকাম ট্যাক্স পাঠানো হচ্ছে? যিনি বিয়ে করবেন, তিনিই পুরোহিত। বাহ!’
তবে মমতা কার কথা তিনি বলছেন, সেটা নিজে মুখে জানাননি। দুইয়ে দুই যোগ করলেই অবশ্য বিষয়টা একেবারে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ সপ্তাহদেড়েক আগেই স্বরূপের ফ্ল্যাটে আয়কর দফতরের অভিযান চলেছে। তিনদিন ধরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। তারপর বুধবার যে অভিযান শুরু হয়েছিল, তা শেষ হয়েছিল শনিবার। স্বরূপ অবশ্য দাবি করেন, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে।