কপালের উপর দিকে একটা কালো মতো দাগ- চোট পাওয়ার পরে প্রথমবার কোনওরকম ব্যান্ডেজ বা স্টিকিং প্লাস্টার ছাড়া জনসমক্ষে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৪ মার্চ নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়েই চোট পেয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো। কপালে গভীর ক্ষত হয়েছিল। তার জেরে কপালে তিনটি সেলাই এবং নাকে একটি সেলাই পড়েছিল। সেদিন রাতে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ফেরার পরে মাত্র দু'বার জনসমক্ষে আসেন মমতা। একবার বহুতল ভেঙে পড়ার পরে গার্ডেনরিচে যান। আর একবার যান ইফতার পার্টিতে। গার্ডেনরিচে যখন গিয়েছিলেন, তখন কপালে ব্যান্ডেজ করা হয়েছিল। আর ইফতার পার্টিতে তাঁর কপালে স্টিকিং প্লাস্টার ছিল। আজ যখন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ধুবুলিয়ার সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে আসেন, তখন অবশ্য মমতার কপালে ব্যান্ডেজ বা স্টিকিং প্লাস্টার নেই। তাঁকে দেখেও চেনা ছন্দে লেগেছে। চেনা ফর্মে বিজেপি, নরেন্দ্র মোদী সরকার, বাম, কংগ্রেসদের আক্রমণ শানিয়েছেন। নিজের সরকারের সাফল্য তুলে ধরেছেন।
ধুবুলিয়ার জনসভা থেকে কী বললেন মমতা?
১) মমতা: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) হল মাথা। ল্যাজা হল জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)। একবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন করলেই এনআরসিতে পড়ে যাবেন। বিজেপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করুন যে কেন তাঁরা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় আবেদন করছেন না? কারণ আবেদন করলে তাঁরা বিদেশি হয়ে যাবেন।
২) মমতা: মহুয়া মৈত্র লোকসভায় জোরে-জোরে কথা বলত। বিজেপির বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর চড়াত। ওকে লোকসভা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ ওকে ফের জেতাবেন।
৩) মমতা: বিজেপি যদি এতই নিশ্চিত থাকে যে এবার লোকসভা নির্বাচনে নাকি ৪০০টি আসন জিতবে। বলছে যে ‘অবকি বার ৪০০’। যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে ভোটের আগেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে পাঠাচ্ছেন কেন?
৪) মহুয়াকে কৃষ্ণনগর থেকে জেতানোর আর্জি রাখলেন মমতা। তিনি দাবি করলেন যে মহুয়াকে জেতালে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। আর বিজেপির মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দেবেন।
৫) বাংলায় একা লড়াই করবে তৃণমূল, আবারও বার্তা দিলেন মমতা। একইসুরে বিজেপি, বাম ও কংগ্রেসকে আক্রমণ শানালেন। বাম এবং কংগ্রেসের জোট হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও সেই সম্ভাব্য জোটকে ‘ঘোঁট’ বললেন মমতা।
৬) মমতা: অন্নপূর্ণা পুজোর পরে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। কেউ ইট ছাড়লেও পাটকেল ছুড়বেন না। কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেবেন না।