তেলাঙ্গানায় আর কয়েকদিন পরই অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে দিওয়ালির আগের দিন শনির সন্ধ্যায় সেকেন্দ্রাবাদে এক জনসভায় ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর সেখানেই দলিত নেতা মনদা কৃষ্ণ মদিগাকে জড়িয়ে ধরে 'ক্ষমা' চান নরেন্দ্র মোদী। তেলাঙ্গানার দলিত ভোটারদের মন জয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিজেপি। এই আবহে তেলাঙ্গানায় দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিলেন, যদি বিজেপি তেলাঙ্গানায় ক্ষমতা আসে তাহলে তারা কোনও এক ওবিসি নেতাকেই মুখ্যমন্ত্রী করবে। এদিকে গতকাল মোদীর জনসভায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মদিগা সংরক্ষণ পোরাটা সমিতির নেতা মনদা কৃষ্ণ মদিগা। তিনি মোদীকে জড়িয়ে ধরেন কেঁদে ফেলেন। (আরও পড়ুন: প্রথায় পড়ল না চিড়, সেনার সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপনে এবার কোথায় গেলেন মোদী?)
উল্লেখ্য, সেকেন্দ্রাবাদে গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল মদিগা সমিতির সভা। সেখানেই উপস্থিত হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। মনদা কৃষ্ণ সেই সভায় দাবি করেন, এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী মদিগাদের সভায় উপস্থিত হননি। এদিকে সেই জনসভায় মোদী বলেন, 'আমি এখানে আপনাদের কাছ থেকে কিছু নিতে আসিনি বা চাইতে আসিনি। আমি এখানে সব রাজনৈতিক দলের হয়ে ক্ষমা চাইতে এসেছি। স্বাধীনতার পর থেকেই সব দল আপনাদের মন ভেঙেছে।'
উল্লেখ্য, বিগত তিন দশক ধরে মদিগা সমিতি তাদের জন্য ওবিসি ভাগে সাব-কাস্ট সংরক্ষণের দাবি করে এসেছে। উল্লেখ্য, তেলাঙ্গানার তফশিলি জাতিভুক্তদের মধ্যে মদিগা হল অন্যতম বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। ঐতিহাসিক ভাবে মুচি বা মেথরের কাজ করে এসেছে মদিগারা। এই আবহে গতকালকের জনসভা থেকে মদিগা নেতা কৃষ্ণকে 'নিজের ভাই' বলে সম্বোধন করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার ভাই কৃষ্ণ, আপনার এই আন্দোলনে বিগত বছরগুলিতে অনেকের থেকেই হয়ত সাহায্য পেয়েছেন। আজ থেকে আরও একজনের সাহায্য পাবেন আপনি। আমার। আমি এখানে সব রাজনৈতিক দলের হয়ে ক্ষমা চাইতে এসেছি। তারা বারবার আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছে।'
এদিকে সভা মঞ্চ থেকে কেসিআর-এর সরকারকেও তোপ দাগেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তেলাঙ্গানা এখন ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। বিগত ১০ বছর ধরে এই রাজ্যে যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। মদিগা জাতিকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা এই তেলাঙ্গানা সরকার পূরণে ব্যর্থ। এদিকে তেলাঙ্গানা গঠনের ক্ষেত্রে কংগ্রেস যে কীভাবে বাধা সৃষ্টি করেছিল, তা কে ভুলে গিয়েছে? তবে এত বলিদানের পর যখন তেলাঙ্গানা গঠন হয়, তখন বিআরএস নেতারা কংগ্রেসের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ধন্যবাদ জানাতে। তাই কংগ্রেস এবং বিআরএস, উভয়ের থেকেই সাবধান থাকতে হবে। এই দুই দলই দলিত বিরোধী। বিআরএস নয়া সংবিধান চেয়ে বিআর আম্বেদকরকে অসম্মান করেছিল। কংগ্রেসও আম্বেদকরের বিরোধিতা করেছিল এবং তাঁকে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচনে জিততে দেয়নি। কংগ্রেসের কারণেই বাবাসাহেবকে ভারত রত্নে ভূষিত করা যায়নি।'