এই রোদ্দুর আবার পরক্ষণেই বৃষ্টি। আবার কুয়াশায় ঢেকে যাওয়া পাহাড়ের পাকদন্ডী। এভাবেই ক্ষণে ক্ষণে বদলায় পাহাড়ের আবহাওয়া।অনেকে বলেন, রাজনীতির আঙিনায় মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের অবস্থানও যেন অনেকটা এই বার বার বদলে যাওয়া পাহাড়ের আবহাওয়ার মতোই। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বার বার বিমলের এই রাজনৈতিক অবস্থান বদলকে ভালোভাবে নেননি পাহাড়বাসী। ভোটের ফলাফলেই তা কার্যত প্রমাণিত। কার্শিয়াং, কালিম্পং, দার্জিলিং এই তিনটি আসনেই পর্যদুস্ত হয়েছে বিমল গুরুং মনোনীত প্রার্থীরা। কার্যত বিমলকে প্রত্যাখান করেছে পাহাড়।
ভোটের ফলাফল অনুসারে দেখা যাচ্ছে দার্জিলিং ও কার্শিয়াংয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। এদিকে দার্জিলিং আসনে বিমল গুরুং শিবিরের প্রার্থী পিটি ওলা চলে গিয়েছেন তৃতীয় স্থানে। কার্শিয়াংয়েও বিমল গুরুং শিবিরের প্রার্থী নরবু জি লামা রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। কালিম্পং আসনটি পেয়েছেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং শিবিরের প্রার্থী। এখানেও বিমল গুরুং শিবিরের প্রার্থী চলে গিয়েছেন তৃতীয় স্থানে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে কেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুংকে প্রত্যাখান করল পাহাড়?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে গত কয়েকবছরে বার বার নিজের রাজনৈতিক অবস্থান বদল করেছেন গুরুং। কখনও বিজেপির হাত ধরেছেন, কখনও আবার তৃণমূলের হাত। তাঁর নেতৃত্বেই জনজীবন অচল, পর্যটন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া আন্দোলন দেখেছিল দার্জিলিং। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ফের ভোটের মুখে সেই বিমলই প্রকাশ্যে আসেন ও বিজেপির হাত ছেড়ে রাতারাতি হয়ে যান তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। মোর্চার অপর গোষ্ঠী বিনয় তামাংদের বিরুদ্ধে প্রার্থীও দাঁড় করিয়ে দেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বিমলে আস্থা রাখল না পাহাড়। তবে কি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বনধের আন্দোলন করতে গিয়ে পাহাড়বাসীর বিশ্বাসে, আস্থায় চিড় ধরিয়েছেন বিমল? তারই প্রতিদান পেলেন ভোটে? এখানেই প্রশ্ন এবার কী করবেন বিমল গুরুং? বিনয় তামাংয়ের সঙ্গে সমঝোতা নাকি অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ফের আন্দোলনের পথে? তবে এনিয়ে বিমল শিবিরের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।