কয়লা কাণ্ডে সাংসদ তথা তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছে সিবিআই। রবিবার আসানসোলে এ প্রসঙ্গে সরাসরি অভিষেককে বিঁধলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেককে কটাক্ষ করে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার কবে একটা কথা ছিল না?’ তবে তিনি এটাও বলেছেন, ‘আমরা ফাঁসি চাই না। আমরা চাই যে মানুষ দেখুক। এই অন্যায় আর পাপের শাস্তি হবেই। এর বিকল্প নেই।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে রুজিরা নারুলাকে এর আগে একাধিক সভায় নাম না করে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু। সে কথাও এদিন মনে করিয়ে দেন বিজেপি নেতা। শুভেন্দু বলছিলেন, ‘লালা, অনুপ মাজিদের টাকা কারা নিত? সেই টাকা যে তোলাবাজ ভাইপোর বাড়িতে গেছে সবাই জানে। আমি তমলুকের একটা সভায় বলেছিলাম থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককের কাশিকর্ন ব্যাঙ্কের এক শাখায় এর টাকা জমা পড়ত। আমাদের রুপিকে ওখানে ভাট বলা হয়। তার পর বারুইপুরের সভায় আমি ডকুমেন্ট দেখিয়েছি। ডকুমেন্ট কীভাবে আমার কাছে এসেছে সেটা বলব না। কিন্তু আমি তো দেখিয়েছি। আর ম্যাডাম নারুলাটা কে? তা ক্রমশই প্রকাশ্য।’
এদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর একাধিক জনসভায় শুভেন্দু তথা বিজেপি–কে নিশানা করে বলেছেন, ‘আমার পিছনে ইডি, সিবিআই লাগাতে হবে না। তোমরা একটা ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করবে, যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে ভাইপো তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত, আমি নিজে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে আসব। আমি চ্যালেঞ্জ করে গেলাম। আমি ইডি, সিবিআই–কে ভয় পাই না।’ সেই কথাও এদিন তুলে অভিষেককে পাল্টা আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘বড় বড় কথা সভায় দাঁড়িয়ে বলছেন। তৃণমূল থেকে বিজেপি–তে যাঁরা গিয়েছে তাঁদের উদ্দেশ্য করে ওয়াশিং মেশিন তত্ত্ব দিয়েছেন। শুধু বড় বড় কথা। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার কবে একটা কথা ছিল না? বলেছেন যে আমি হাঁটতে হাঁটতে ফাঁসির মঞ্চে যাব। আমরা তো অপেক্ষা করে আছি। তবে ফাঁসি আমরা চাই না। আমরা চাই যে মানুষ দেখুক। কিন্তু এই অন্যায় যা করেছে, পাপের শাস্তি হবেই এর বিকল্প নেই।’
উল্লেখ্য, রবিবার বেলা ২টো নাগাদ কালীঘাটে অভিষেকের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তবে সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না অভিষেক বা তাঁর স্ত্রী। এদিন সিআরপিসির ১৬০ ধারায় সাক্ষী হিসাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তাঁরা বাড়ি ফিরলে যেন সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কোথাও হাজিরা দিতে হবে না রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর সুবিধামতো সময়, তাঁর সুবিধামতো জায়গায় রুজিরাদেবীকে জেরা করবেন সিবিআইয়ের মহিলা আধিকারিকরা।
এ ঘটনার পর থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতির চাপানউতোর। এ ঘটনায় প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ এনেছে রাজ্যের শাসকদল। আর সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতারা। পাশাপাশি রবিবার বিকেলে এক টুইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আইনের ওপর তাঁদের সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে। কিন্তু ওরা যদি ভেবে থাকে যে এসব করে আমাদের ভয় দেখাবে, তাহলে ভুল করছে। পিছু হঠার বান্দা আমরা নই।’