‘টুয়েলভথ ফেল’-এর সুবাদে এখন টক অফ দ্য় টাউন বিক্রান্ত ম্যাসি। বলিউডে হালে লাইমলাইট কাড়লেও হিন্দি টেলিভিশনের দর্শক কিন্তু বিক্রান্তের অভিনয়ের জাদুতে বুঁদ হয়েছিল দেড় দশক আগেই! যদিও সিরিয়ালপ্রেমীরা তাঁকে চিনত ‘বালিকা বধূ’ আনন্দির প্রগতিশীল ‘জিজুসা’ হিসাবে।
কালার্সের কালজয়ী শো ‘বালিকা বধূ’তে সমাজ-পরিবারের বিরুদ্ধ গিয়ে বিধবা সুগনাকে বিয়ে করার সাহস দেখিয়েছিল শ্যাম। সেই চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন বিক্রান্ত। তুমুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও মাঝপথেই টেলিভিশন ছাড়েন বিক্রান্ত। সেই নিয়ে এতদিন পর মুখ খুললেন অভিনেতা।
'আনফিল্টারড বাই সামদিস'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানান, কীভাবে কলেজে পড়তেই জীবনের মূল্যবান পাঠ তিনি পেয়েছিলেন। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে বিক্রান্ত। তিনি বলেন, বাবার মাইনের টাকা প্রথম ১৫ দিনে শেষ হয়ে যেত। তাঁর পারিবারের দৈন্য়দশা দেখার পর বন্ধুদের আচরণ তাঁর প্রতি পালটে গিয়েছিলেন। সেটা ছিল তাঁর জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
বিক্রান্ত একই সাক্ষাৎকারে বলেন, অর্থকষ্টের মধ্যে বড় হওয়ার পর টেলিভিশনে কাজ শুরু করেই মোটা টাকা রোজগার করা শুরু করেন তিনি। অকপটে তিনি বলেন, ‘২৪ বছর বয়সে আমি নিজের বাড়ি কিনে ফেলেছিলাম। ভাবুন তো একটা ২২-২৩ বছরের ছেলে মাসে ৩৫ লাখ টাকা উপায় করছিল, আর কী চাই! আমার মতো পরিবারের কারও পক্ষে এটি অনেক কিছু ছিল। বাড়ি কেনার পর, ঋণ পরিশোধ করার পর, বাবা-মাকে উন্নত জীবন দেওয়ার পরেও আমি কিন্তু রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারতাম না। তারপর আমি সব ছেড়ে দিলাম। আমি ভালো কাজ করতে চেয়েছিলাম…’। টেলিভিশনের নিশ্চিত ভবিষ্যত, চ্যানেলের ৩৫ লাখের মাসিক চুক্তি পায়ে ঠেলে নতুন করে স্ট্রাগল শুরু করেন অভিনেতা। কারণ ছোটপর্দার রিগ্রেসিভ কনটেন্ট না-পসন্দ ছিল বিক্রান্তের। ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়লেও জব স্যাটিসফ্যাকশন ছিল না। অগত্যা মনের কথা শুনেছিলেন তিনি।
বিক্রান্ত বলেন, একটা সময় তাঁর সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং প্রেমিকা শীতল (এখন স্ত্রী)-এর থেকে হাতখরচ নিয়ে তিনি ছবির জন্য অডিশন দিতে যেতেন। এরপর লম্বা পথ পেরিয়েছেন বিক্রান্ত। ২০১৩ সালে 'লুটেরা' ছবিতে প্রথম রুপালি পর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক ঘটে তার। এরপর এ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ, হাসিন দিলরুবা-র পর হালে টুয়েলভথ ফেলের সুবাদে সবার নয়নের মণি তিনি। হাতে রয়েছে একগুচ্ছ ছবির অফার। ব্যক্তিগত জীবনেও খুশি তিনগুণ হয়েছে।
চলতি মাসের ৭ তারিখেই বিক্রান্ত ও শীতলের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছে। দীর্ঘদিন প্রেমসম্পর্কে আবদ্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বিয়ে করেন বিক্রান্ত-শীতল। পর্দার মনোজের জীবনের শ্রদ্ধাও তাঁকে ঠিক একইরকমভাবে আগলে রেখেছেন শুরু থেকে।