‘আমার সময় শেষ, এখন অবসরপ্রাপ্ত’। সম্প্রতি ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে সেদেশের সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনটাই মন্তব্য করেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। আর পর্দার 'ফেলুদা'র আচমকা এমন মন্তব্যে হতবাক অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে টলিপাড়ায়।
কিন্তু হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত জনপ্রিয় অভিনেতার? তবে কি কোনও চাপা অভিমান? যদি সব্যসাচী চক্রবর্তীর স্পষ্ট জবাব, ‘কোনও অভিমান নেই, বুড়ো হয়ে গিয়েছি, কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম, আমি অসুস্থ, আর এবার নতুনদের জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
গত ১৪ জানুয়ারি, শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ঢাকা আান্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সেই উৎসবের উদ্বোধনী ছবি ছিল ফাখরুল আরেফিন খান পরিচালিত ‘জেকে ১৯৭১’ । এই ছবিতে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী। আর তাই ছবির প্রদর্শনের জন্যই তাঁর বাংলাদেশে যাওয়া। সেপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। এর আগেও আসার আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম, তবে মহামারীর কারণে আসতে পারিনি। এবার আসতে পেরে খুব খুশি।’
তবে 'জেকে ১৯৭১'-এর পর এবার আর কোন ছবিতে তাঁকে দেখা যাবে? সেপ্রশ্নের উত্তরে সব্যসাচী চক্রবর্তী বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আপাতত কোনও ছবিতে নাম লেখাতে চান না তিনি, বয়স বেড়েছে তাই অবসর নিতে চান। তবে নিজের দীর্ঘ কেরিয়ারে বড় প্রাপ্তি হিসেবে 'ফেলুদা'র কথাই উল্লেখ করেন অভিনেতা। তবে তাঁর অবসর প্রসঙ্গে অভিনেতার স্ত্রী মিঠু চক্রবর্তীর সঙ্গে HT বাংলা ডিজিটালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এনিয়ে অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর ছেলে গৌরব চক্রবর্তীও এক সংবাদ-মাধ্যমকে জানান, তাঁর কাছেও এখনও স্পষ্ট নয়, বাবা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সব্যসাচী চক্রবর্তী অভিনীত ‘জেকে ১৯৭১’ ছবির গল্প ২৮ বছর বয়সী এক দুরন্ত সাহসী যুবককে নিয়ে। যিনি কিনা একজন ফরাসি নাগরিক, নাম জ্যঁ ক্যুয়ে। ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারওয়েজের একটি বোয়িং ৭২০ বিমানের ককপিটে উঠে পড়েন । তাঁর ব্যাগে বোমা ও হাতে বন্দুক। বিমানটিকে রানওয়েতে পাঁচ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন। উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থীদের জন্য ২০ টন ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া। সেই ফরাসি যুবককে নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জেকে ১৯৭১’। দাবি করা হচ্ছে সেটাই বাংলাদেশে তৈরি ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা।’ আর এই ছবিতেই ছবিতে এক পাকিস্তানি পাইলটের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘ফেলুদা’ খ্যাত সব্যসাচী চক্রবর্তী।