গানের জগতের সঙ্গে যারা একটু হলেও ওয়াকিবহাল, তাঁরা ‘অটোটিউন’ শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। একটা সময় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে একসঙ্গে লাইভ রেকর্ড করা হত গান। কিন্তু এখন পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা একাধিক মানুষ রেকর্ড করতে পারেন গান। আলাদা আলাদা করে রেকর্ড করা সেগুলিকে জড়ো করে রূপ দেওয়া হয় পূর্ণ সংগীতে। অটো টিউন, যা সুরের ওঠানামা ঠিক করে দেয়, তা আজকাল ব্যবহৃত হচ্ছে ভারতীয় সংগীতেও। সম্প্রতি এক মিউজিক পডকাস্টে অরিজিৎ সিং-কে বলতে শোনা যায় যে, কখনোই অটো-টিউন একজন ‘বেসুরো গায়কদের’কে ‘ভালো গায়ক’ বানাতে পারে না। সঙ্গে এটাও বলেন যে, এআর রহমানই প্রথম যে ভারতে প্রথম চল এনেছিল অটো টিউনের।
‘একজন বেসুরো গায়ককে কখনোই ভালো গায়ক বানাতে পারে না অটো-টিউন। এরকম না যে আপনি যা ইচ্ছে গেয়ে দিলেন। আর অটো-টিউন সেটাকে সুরে ফেলে দিল। এটা সম্ভবই না।’, বলতে শোনা গেল অরিজিতকে।
গায়ক আরও বলেন, ‘একটা সময় মানুষ যখন ছিল এআর রহমানের গানের বড় ভক্ত, তিনি সেই সময় গানে অটো-টিউন ব্যবহার করতেন। যেখানে গায়করা আরও শ্রুতি মধুর শোনায় আর শ্রোতাদের কাছেও তা বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।’
অটো-টিউন ব্যবহারের টেকনিক্যাল কারণও জানান অরিজিৎ সিং। বলেন, ‘যখন কোনও গায়ক গান গায়, তখন তাঁদের আবেগ জড়িয়ে থাকে সেখানে। এটা কখনোই পারফেক্ট হতে পারে না। সুরের ওঠানামা থেকেই যায়। বেশিরভাগ গায়কেরই তা হয়, সোনু নিগম অবশ্য এরমধ্যে পড়েন না। উনি কখনো বেসুর হতে পারেন না বলেই আমি মনে করি। আবেগের কারণে সুরের নড়াচড়া হতেই পারে। সেগুলো অনেকখানিই ঠিক করে দেয় অটো-টিউন।’
অরিজিৎ এই পডকাস্টেই উল্লেখ করেছেন যে, প্রীতম প্রতিটি গানে অটো-টিউন ব্যবহার করেন। তবে মিঠুন শর্মা এবং বিশাল ভরদ্বাজের মতো সুরকাররা আবার এটিকে ব্যবহার করা একেবারেই পছন্দ করেন না। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, এআর রহমানই এটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ভারতের সংগীত জগতে। ‘কিছু মিউজিক কম্পোজার এটা পছন্দ করেন না যেমন মিঠুন শর্মা, বিশাল ভরদ্বাজ। এআর রহমানও এখন আর করেন না, তবে আগে করতেন। এখন গায়কদের যেমন আওয়াজ আছে, তাই-ই তিনি রাখেন। তবে প্রীতমের গানে সবসময়ই অটো-টিউন থাকে, সেটাকে আরও ভালো করে তোলার জন্য।’ বলেন গায়ক।