২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরদৌস আহমেদ। প্রচারে নামার পর থেকে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনায় জেরে নানান সমস্যার থেকে বাতিল হয়ে যায় অভিনেতার ভিসা। যার ফলে আড়াই বছরের বেশি সময় ভারতে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি। অবশেষে এত বছর পর ভারতে আসার ভিসা হাতে পেলেন অভিনেতা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'র কাছে লোকসভা নির্বাচনে প্রচার বিতর্ক প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অভিনেতা। আক্ষেপের সুর অভিনেতা বলেছেন, 'আমি জানতাম না প্রচার করা যাবে না। আমাকে যাঁরা প্রচারের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরাও জানতেন না আমার সেখানে যাওয়া উচিত নয়। এটা অবশ্যই ভুল হয়েছে। যাই হোক, এরজন্য আমি দীর্ঘদিন ভুগেছি। তখন আমার ভিসা বাতিল করে দেওয়া হত, যা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক ছিল। আমি জ্ঞানত কখনোই এমন কিছু চাইনি যে কলঙ্ক লাগে। দেশের সুনাম নষ্ট হোক এমনটা কোনওদিন চাইনি। কিন্তু, এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটল যে অনেক কিছু সাফার করতে হয়েছে'।
ভিসা পেয়ে অভিনেতা জানিয়েছেন, এই বিতর্কের জন্য টলিউডের বেশ কয়েকটি কাজ তাঁর হাত থেকে চলে যায়। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, দত্তার মতো সিনেমার কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে, এই কষ্ট সারা জীবন থেকে যাবে। নতুন আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র নিয়ে কথা হচ্ছিল, পাইপলাইনে ছিল, সেগুলোও থেকে সরে আসতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি ‘বঙ্গবন্ধু’র মতো একটি সিনেমা, যেটা বাংলাদেশের একটা ইতিহাস রচনা করবে, সেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারলাম না। এটা তো অনেক বড় একটা না পাওয়ার কষ্ট। ঘটনাটি যে ইচ্ছা করে করিনি ভিসা পাওয়ার পর তা মনে হল।’
বাংলাদেশ থেকে অন্যান্যা যে শিল্পীরা কলকাতায় এসে কাজ করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে অভিনেতা বলেন, 'ঘটনা থেকে যে শিক্ষাটা পেয়েছি তা আমার একার জন্য নয়। আমার উত্তরসুরীরা যেন কোনও কাজ করার আগে একটু বিষয়গুলি সম্পর্কে খোঁজ নেন সেই অনুরোধ করব। শিল্পীরা আবেগপ্রবণ হয়, ইমোশনালি কোনও ভুল করলে চলবে না।'
প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা নির্বাচনের সময় উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌসকে। একজন বাংলাদেশের নাগরিক কীভাবে ভারতে এসে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন? এরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় পদ্ম শিবিরের পক্ষ থেকে। ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরপরই বাংলাদেশি অভিনেতা ফিরদৌসের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভারত সরকারের তরফে। সেই বিতর্কের জল অনেক দূর গড়িয়েছে। অবশেষে প্রায় আড়াই বছর পর ফের ভারতে আসার ভিসা পেয়েছেন ফিরদৌস।