সালটা ছিল ১৯৯০, তখনই কাশ্মীর ছেড়ে চলে কলকাতায় চলে এসেছিলেন অভিনেতা ভরত কল ও তাঁর পরিবার। তাঁরা আদপে কাশ্মীরি পণ্ডিত। তবে অবাঙালি হয়েও ধীরে ধীরে টলিপাড়ায় অভিনেতা হিসাবে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন ভরত কল।
এদিকে ব্যক্তিগত জীবনে প্রথম স্ত্রী অনুশ্রী দাসের সঙ্গে ভরত কলের সম্পর্ক ভাঙে অনেক আগেই। তারপর মুম্বইয়ে বসবাসকারী বাঙালি অভিনেত্রী সায়ন্তনী ঘোষের প্রেমে পড়েছিলেন ভরত। দীর্ঘদিন লিভ-ইন করেছেন তাঁরা। তবে সে প্রেমও ভেঙে যায়। সেই প্রেম ভাঙার অনেকগুলো বছর পর জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন ভরত কল। বয়সে ভরতের থেকে ১৮ বছরের ছোট জয়শ্রী। তাঁদের এক মেয়েও রয়েছে। নাম আরিয়া।
এদিকে বয়সে এতটা ছোট জয়শ্রীকে বিয়ে করার জন্য একসময় 'স্বার্থপর' তকমাও জুটেছিল ভরতের। বয়সের পার্থক্যে বিয়ে করলে চর্চা হয় ঠিকই, কিন্তু ভরত কলকে 'স্বার্থপর' কেন বলা হয়েছিল?
অনেকেই হয়ত জানেন না, অভিনেতা ভরত কল ক্যানসারে আক্রান্ত। জয়শ্রীকে যখন তিনি বিয়ে করছেন, তখনই তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। আর সেকারণেই অভিনেতার নামের সঙ্গে জুড়েছিল 'স্বার্থপর' তকমা। একবার এবিষয়ে টিভ9কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা নিজেই মুখ খুলেছিলেন।
ভরত বলেন, তাঁরে একজন বলেছিলেন, ‘নিজের ক্যানসার জেনেও কেন এতটা বয়সে ছোট মেয়েকে বিয়ে করছেন আপনি! তারপর সন্তানের পিতাও হয়েছেন। তাঁদের অনিশ্চিত জীবন তৈরি করে কী লাভ আপনার?’ কেউ আবার বলছিলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে করছি। ভরত-জয়শ্রীকে দেখলে বাবা-মেয়ে মনে হয়। তখন শুনতে খারাপ লাগলেও এখন লাগে না।’
ভরত বলেন, এমন মন্তব্য শুনে কষ্ট পেয়েছিল তিনিও। মন ভেঙে গিয়েছিল। তবে তাঁর কথায়, স্ত্রী জয়শ্রীকে নিয়ে তিনি চিন্তা করেন না। কারণ তিনি 'ফাইটার'। তবে ভরতের চিন্তা মেয়ে আরিয়াকে নিয়ে। ভরতের কথায়, ‘আমার দুরারোগ্য অসুখ হয়েছিল, ক্যানসার। ফলে নিজের জীবন নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নই। তবে হয়ত আরিয়ার বড়বেলাটা আমি দেখে যেতে পারব না। তবে ওর জীবনে যাতে কোনওকিছুর অভাব না থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করে যাব।’
হ্য়াঁ, ভরত কল আপাতত ক্যানসার মুক্ত। তবে ক্যানসারের কাঁটা কাটিয়ে উঠলেও, গত বছরই চণ্ডীগড়ে হার্টের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন ভরত। অভিনেতার বুকে স্টেন্ট বসে। আর সেই সময়ও ভরতের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জয়শ্রী।