বিয়ের জন্য জন্য একদিনের ছুটির আবেদন করেছিলেন শ্রেয়স তলপড়ে। সেই ছুটি চাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল অভিনেতার জীবনে! বিয়ে ভাঙে ফেলার নির্দেশ পান তিনি। হ্যাঁ, ‘ইকবাল’ হয়ে ওঠবার সফরে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন অভিনেতা, তবে বিয়ে ভাঙার নির্দেশ আসবে তেমনটা বোধবয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
ইন্ডাস্ট্রি দু-দশকেরও বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছেন শ্রেয়স। অভিনেতাকে পরিচিতি এনে দিয়েছিল জাতীয় পুরস্কার জয়ী ছবি ‘ইকবাল’। সালটা ২০০৫। তবে জানেন কি এই ছবির আগে অভিনেতাকে বিয়ে বাতিল করবার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইকবাল পরিচালক নাগেশ কুকুনুর।
ইকবাল ছবির শ্যুটিং চলাকালীন বিয়ে তিনদিন আগে ৩১ ডিসেম্বর তারিখে ছুটি চেয়ে বসেছিলেন অভিনেতা। তারিখ শুনে পরিচালক ভেবেছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে বছরের শেষদিন ছুটি চাইছেন শ্রেয়স। কিন্তু যখন নাগেশ কুকুনুর জানতে পারেন ওই দিন বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন অভিনেতা, তাঁর মাথা ঘুরে যায়। তখনই শ্রেয়াসকে বিয়ে বাতিল করার নির্দেশ দেন তিনি।
‘ইকবাল বিবাহিত হতে পারে না’, এমনটাই ধারণা ছিল নাগেশের। ছবিতে একজন কিশোরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শ্রেয়স। তাই সেই অভিনেতা বাস্তব জীবনে বিবাহিত, এটা নিজেই হজম করতে পারেননি নাগেশ। দর্শকের পক্ষেও সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না এমনটাই ধারণা ছিল তাঁর। মধ্যবিত্ত ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী শ্রেয়সের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। বিয়ে বাতিল করা তাঁর পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। অভিনেতা পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘আমি একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে, এবং আমাকে যখন বিয়ে বাতিলের কথা বলা হল আমি তো বুঝেই উঠতে পারছিলাম না কী করব। ওঁনাকে অনেক বোঝানোর পর, এবং আশ্বাস দেওয়ার পর যে এই বিয়ের কথাটা আমি জানাজানি হতে দেব না, উনি অনুমতি দিয়েছিলেন বিয়ের’।
পরিচালকের আপত্তির জেরে বিয়ের খবর পুরোপুরি চেপে রেখেছিলেন শ্রেয়স। ছবির প্রমোশনে কোথাউ নিজের বিবাহিত হওয়ার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পেতে দেননি পর্দার ইকবাল। অন্যদিকে ছবির প্রিমিয়ারে আসবার জেদ ধরে বসেছিল শ্রেয়সের নববিবাহিত স্ত্রী দীপ্তি। তাঁর আবদার মেটাতেও ফন্দি এঁটেছিলেন নায়ক। ছবির প্রিমিয়ারে নাগেশ কুকুনুরের বোন সাজিয়ে দীপ্তিকে হাজির করেছিলেন তিনি। এ কূল-ও কূল দুই বাঁচাতে গিয়ে কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি অভিনেতাকে। আজ প্রায় দু-দশক পর সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে হাসি থামল না শ্রেয়সের।