ফুলকি-র সঙ্গে একইদিনে সফর শুরু হয়েছিল স্টার জলসার ‘সন্ধ্যাতারা’র। প্রথম কয়েক সপ্তাহ TRP তালিকায় সেরা ১০-এর তালিকায় ঠাঁই হয়নি অন্বেষা হাজরার কামব্যাক শো-এর। সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তর আলোচনা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পায়ের নীচের মাটি শক্ত করেছে এই মেগা, আর চলতি সপ্তাহে সকলকে অবাক করে সোজা সেরা পাঁচে স্থান করে নিয়েছে। খুশি অন্বেষা ভক্তরা। কিন্তু সন্ধ্যার কী প্রতিক্রিয়া সেই নিয়ে? জানতে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল অন্বেষার সঙ্গে।
‘সন্ধ্যাতারা’র নিয়ে এই সুখবর আমারাই প্রথম জানাই অন্বেষাকে। খানিক ভাবলেশহীন ভঙ্গিতেই বললে, ‘আমার না উত্তেজনা লাগছে না। আমাদের সিরিয়াল চার্টের উপরে থাক,নীচে থাক। তলানিতে চলে যাক, আমার সত্যি কিছু উত্তেজনা বা দুঃখ পাওয়া কোনওটাই হয় না টিআরপি নিয়ে’। টিআরপি কোনওদিন তাঁকে ভাবায় না, স্পষ্ট কথা অন্বেষার। অভিনেত্রী বললেন, ‘টিআরপি-র দৌড় নিয়ে সবাই কথা বলে। এই প্রতিযোগিতা তো মূলত দুটো লিডিং চ্যানেলের মধ্যে। আমার শুরুটা কিন্তু কালার্স, আকাশ এই সব চ্যানেলে। শুরু হয়েছিল ‘কাজললতা’ দিয়ে। আমার প্রথম বড় কাজ (চুনী পান্না) স্টার জলসাতেই। আমার প্রথম ডিরেক্টর অনুপমদা আমাকে বলেছিল টিআরপি-র নিরিখে সবকিছু হয় না। আজ টিআরপি ৬.৪ হল, যদি কোনওদিন ১৬.৪ হয় বা -০.৪ হয়। যে কাজটা ১৪ ঘন্টা আমাকে ফ্লোরে এসে করতে হয় সেটা বদলাবে না। টিআরপি আমার কাজকে ভালো বা খারাপ করে দেবে না… কোনওদিন টিআরপি আমাকে এফেক্ট করতে পারেনি'।
পর্দার সন্ধ্যা স্পষ্ট বললেন, ‘তাই টিআরপি নিয়ে আমার বিরাট আনন্দ হচ্ছে বা নাচানাচি হচ্ছে, মাতামাতি হচ্ছে বা খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে এমনটা নয়। টিআরপি আমাদের হতাশও করে না, আবার বাড়তি উৎসাহ জোগায় না'।
টিআরপি তালিকায় উনিশ-বিশ হলেই এখন দু-মাসেও সিরিয়াল বন্ধ করে দিচ্ছে চ্যানেল। ফুলকি-র সাফল্য কি একেবারেই ভাবায় না অন্বেষাকে? হাসি মুখে জবাব, 'একদম নয়। আমি চিত্রনাট্যে বিশ্বাসী। এগুলো (প্রতিযোগিতা) আমাকে কেন এফেক্ট করবে? সেও (দিব্যানি) তার কাজ করতে এসেছে। আমি কাজললতা দিয়ে শুরু করেছিলাম… আজ ফুলকি যে করছে, নতুন মেয়ে- দিব্যানি মন্ডল, আমি খুব খুশি ওর জন্য। যারা একদম নতুন মুখ, আমার ঋত্বিকদাও ছিল। এখন যার সঙ্গে কাজ করছি সৌরজিৎ সেও রয়েছে। এটা ওদের জন্য বিশাল বড় পাওনা। প্রথম কাজেই এত দর্শক ওদের চিনতে, ভালোবাসা দিচ্ছে। আমি চাইব ওরা আরো ভালো করুক এটাই আমার প্রর্থনা। আর এই গ্রুপে আলোচনা আমি দেখব কখন? আমি ১০০ পার্সেন্ট চার্জ নিয়ে সেটে ঢুকি, আমি যখন ১৪ ঘন্টা পর ফিরি খুব বেশি হলে ১২% চার্জ কমে। কারণ নেটটা অন থাকে, না হলে ফোন আমার ব্যাগেই পড়ে থাকে'। এরপর যোগ করেন, বাড়ি ফেরার সময় মোবাইল হাতে নিয়ে পছন্দের গান শোনেন অথবা বাবাকে ফোন লাগান। আর অবশ্যই ‘রামপ্রসাদ’ দেখেন। এই সিরিয়াল না দেখে ঘুমোন না অন্বেষা।
জোর গলায় অন্বেষা বললেন, ‘আমরা কেউ কারুর সঙ্গে কম্পিটিশন করতে আসেনি। সে সেইটুকুই পাবে যতটা তার বরাতে রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি খুব ছোট জায়গা, যারা নতুন… মানে আমিও নতুন সবে ছ বছর হয়েছে। তবে ছ মাস আর ছ বছরে একটা তো পার্থক্য থাকে। আমি নতুনদের অ্যাপ্রিসিয়েট করতে ভালোবাসি, ওদের কাজ দেখে আমার ভালো লাগে’। তাহলে চটজলদি যে সিরিয়াল বন্ধ হচ্ছে সেই নিয়ে কী মত অন্বেষার? নায়িকা বললেন- ‘আমরা তো শিল্পী, আমাদের কাজ করে যেতে হবে। একটা সিরিয়াল যখন বন্ধ হয়, তখন অনেক মানুষের উপর চাপ পড়ে। কিন্তু শিল্পী হিসাবে প্রথম দিনেও আমি যে কাজটা করতে হবে, শেষদিনেও সেই কাজ করব। আজ থেকে ২০ বছর পর যদি আমি কোনও শো-এর লিড রোলে থাকি, তাহলে বুঝব হ্যাঁ আমি কিছু পেরেছি’।