পদ্মশ্রী পাচ্ছেন রাঢ় বাংলার লোকশিল্পী রতন কাহার। হ্য়াঁ, তিনিই সেই সেই 'বড়লোকের বিটিলো' খ্যাত শিল্পী। যার সেই গান ২০২০তে ‘গেন্দা ফুল’ মিউজিক ভিডিয়োতে ব্যবহার করেছিলেন বাদশা। সেই ঘটনা ঘিরেই চরম বিতর্ক তৈরি হয়। কারণটা এতদিন অনেকেই জানেন। প্রথমে বাদশা 'বড়লোকের বিটিলো'র মূল শিল্পী রতন কাহারকে কৃতিত্ব দেননি। আসলে বাদশার জানাই ছিল না গানটি আসলে রতন কাহারের। পরে জানার পর তিনি নিজের মিউজিক ভিডিয়োতে রতন কাহারের কৃতিত্ব স্বীকার করেন। ভুলের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাও চান। 'গরিব' শিল্পী রতন কাহারের পাশে দাঁড়াতে তাঁকে ৫ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন।
বাদশার জন্য তৈরি হওয়া সেদিনের সেই বিতর্কের কারণে অনেকেই সেদিন রতন কাহারের কথা জেনেছিলেন। তাঁর সৃষ্টি, কৃতিত্ব, গান, শিল্পীসত্ত্বার কথা জেনেছিলেন বহু মানুষ। আর এবার ২০২৪-এ 'পদ্ম' পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন রতন কাহার। আর এবিষয়েই Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে কথা বললেন শিল্পী।
রতন কাহার বলেন, ‘সত্য়ি কথা বলতে কি জানেন, আমার কথা কেউ ভাবে না। ভারত সরকার ভেবেছে। জীবনের শেষ পর্যয়ে এসে আমাকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে, এটা আমার কাছে গর্বের। আমি ধন্য। আমি পুরস্কার নিতে অবশ্যই যাব।’
বয়স কত হলে?
একথায় রতন কাহার বলেন, ‘আমার বয়স ৮৮-৮৯ হবে। ১৯৩৫ সালে আমার জন্ম।’
'বড়লোকের বিটিলো'-র সেই বিতর্কের পর বাদশার সঙ্গে কাজ করেছিলেন, তারপর আর কী কাজ পাচ্ছেন?
বাদশার কথায় আবেগতাড়িত রতন কাহার বলেন, ‘বাদশা খুবই ভালো লোক। উনিই আমায় ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। গানের জগতে এতদিন আছি, আমার কাছে অনেকেই অনেক কিছু নিয়েছেন, অনেকেই দাম দেননি। আমার গান নিয়েই অনেকে আজ বড় মাপের শিল্পী হয়েছেন। তবে বাদশা সত্য়িই অমায়িক। উনি সবটা জেনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই সময় বিতর্ক হয়েছিল বলেই হয়ত আজ আমার নামটা ছড়িয়েছে। যদিও বাদশার সঙ্গেও আমার বহুদিন যোগযোগ নেই। যোগাযোগ করতে পারলে ভালো হত। নম্বরটা হারিয়ে ফেলেছি…। ’
আজ ২৬ জানুয়ারি, আবার এমন একটা সুখবরও পেলেন, আজকের দিনটা কীভাবে কাটলো?
এপ্রশ্ন রতন কাহার বলেন, ‘আজ বাড়ির কাছে এক জায়গায় পতাকা উত্তোলনে গিয়েছিলাম। আমার পদ্মশ্রী পাওয়ার খবরটা শুনে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এসেছিলেন আমার কাছে। অনেকেই আমার ছবি তুললেন আমার জীবন নিয়ে নানান কথা জিগ্গেস করছিলেন।’
বাদশার সঙ্গে কাজের পর এখন কী কাজ করেন?
রতন কাহার জানান, ‘এখন অনেক প্রোগ্রাম পাই। সেগুলোতে যাই।’
রতন কাহার আরও জানান, তাঁর তিন ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের একজন মাছের আড়তে কাজ করেন। অন্য দুজনের একজন টিকিট বিক্রি করেন , আরেকজন বিয়ে করে ঘরজামাই। আর মেয়ে বাড়িতেই থাকে।