'বিনোদিনী' হয়ে ধরা দিয়েছেন, আর এবার 'দ্রৌপদী' হয়ে আসতে চলেছেন রুক্মিণী মৈত্র। আর তাঁকে দৌপদী রূপে হাজির করবেন সেই একই পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। প্রতিভা রায়ের ওড়িয়া উপন্যাস ‘যাজ্ঞসেনী’ (Yajnaseni) অবলম্বনে তৈরি হবে এই ছবি। আজই (শুক্রবার, ২৮ জুলাই) সামনে এসেছে। রাজকীয় সেই পোস্টারে দেখা মিলেছে রাজ সিংহাসন, আর তার দু'পাশে দেখা মিলেছে জ্বলন্ত মশালের, সিংহাসনের ঠিক উপরের দেওয়ালেই রয়েছে সিংহের মুখের আকৃতি এবং তারও উপরে তীর-ধনুক। সামনে আবার জ্বলছে যজ্ঞের আগুন।
এদিকে দেবের প্রযোজনায় 'দ্রৌপদী'র ফার্স্টলুক পোস্টার মুক্তির সঙ্গেই ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এরই মাঝে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কাছে ছবি প্রসঙ্গে অজানা কিছু তথ্য ফাঁস করলেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। পরিচালক জানিয়েছেন, ছবির শ্যুটিং হওয়ার কথা রয়েছে হায়দরাবাদে এবং মহারাষ্ট্রে। বাংলায় এই ছবির কোনও অংশেরই শ্যুটিং হবে না। কারণ, এখানে 'দ্রৌপদী'র জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই।
আরও পড়ুন-'এখনও এত্ত ভালোবাসেন!' আবেগে কেঁদে ফেললেন ৬৫ বছরের সানি, জল মুছলেন আমিশা
পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘কলকাতায় এই ছবির শ্যুটিং করা যাবে না, কারণ এখানে সেই infrastructure-ই নেই। ছবির জন্য ৫০০০ বছর আগের যেমন সেট লোকেশন চাইছি, সেটা কলকাতাতে পাওয়া ভীষণই মুশকিল। কলকাতায় শ্যুটিং করতে হলে পুরো সেট বানিয়ে শ্যুটিং করতে হবে। আর সেটা আমাদের সেই মহারাষ্ট্র কিংবা হায়দরাবাদ থেকেই আনাতে হবে। তাতে সিনেমাটা ভীষণই খরজ সাপেক্ষ হয়ে যাবে। এটা যেহেতু পিরিয়ড ড্রামা, সেটা মাথায় রেখে, তার সঙ্গে খরচ আয়ত্তের মধ্যে রেখেও যাতে সিনেমাটা সুন্দর হয়, এটা অন্যকোনও ভারতীয় সিনেমার থেকে কোনও অংশেই যাতে কম না হয় সেটা দেখতে হবে। আর তাই মহারাষ্ট্র কিংবা হায়দরবাদে শ্যুটিংয়ের পরিকল্পনা করছি।'
রামকমল মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, 'এর অর্থ এই নয় যে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গকে আমরা ছোট করছি। তবে যেহেতু পরিকাঠামো নেই তাই অন্য শহরে গিয়ে শ্যুটিং করতে হবে। এটা বরং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখা উচিত। হয়ত এই প্রথম গোটা একটা বাংলা সিনেমার শ্যুটিং মহারাষ্ট্রে হবে। আমরা এখন দেখি দক্ষিণ ভারতের সিনেমার ও হিন্দি সিনেমার শ্যুটিংও অনেকসময় কলকাতায় হচ্ছে। ঠিক তেমনভাবেই কলকাতার ছবিও যদি হায়দরাবাদ কিংবা মুম্বই, বা অন্য শহরে শ্যুটিং হয়, তাতে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতিও অন্য শহরের মানুষ জানবে। তাই কলকাতায় কেন শ্যুটিং হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন না তুলে এখানকার ছবি বাইরে গিয়ে শ্যুটিং হবে সেটা নিয়ে আনন্দ পাওয়া উচিত।’
আর বারবার ছবিতে রুক্মিণী মৈত্রকে কেন বেছে নিচ্ছেন? এ প্রশ্নে পরিচালক বলেন, ‘রুক্মিণীর সঙ্গে বিনোদিনীতেও তো কাজ করলাম, চরিত্রের প্রতি ওঁর নিষ্ঠা ও সমর্পণ লক্ষ্য করেছি। আর সেকারণেই ওকে বেছে নেওয়া। ও চরিত্র হয়ে উঠতে অনেক সময় দেয়, আর সততার সঙ্গে কাজ করে। ওঁর বিনোদিনী হয়ে ওঠা নিয়েও অনেকের সংশয় ছিল, আমি জানি, ওঁর দ্রৌপদী হয়ে ওঠা নিয়েও অনেকের সংশয় থাকবে। তবে আমি যেহেতু রুক্মিণীর সঙ্গে কাজ করেছি, তাই ওঁর নিষ্ঠা, একাগ্রতা, পড়াশোনা সবই দেখেছি। তাই আমার বিশ্বাস ও দ্রৌপদীর চরিত্রটাও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবে, সেকারণেই ওকে নেওয়া।’
পরিচালক আপও জানিয়েছেন ‘দ্রৌপদী’ প্যান ইন্ডিয়া ছবি, শুধু হিন্দি নয়, একাধিক ভাষাতে ছবি মুক্তি পাবে। শ্যুটিং বাংলাতে হবে নাকি হিন্দিতে হবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। ‘যাজ্ঞসেনী’ উপন্যাস অবলম্বনেই ছবি তৈরি হবে, ৫০০০ বছরের পুরনো প্রেক্ষাপটে। অনেকে ভাবছেন আধুনিক যুগের ছাঁচে ফেলে সিনেমা হবে, সেটা কিন্তু নয়।