দেখতে দেখতে একসঙ্গে পথচলার চার দশক কাটিয়ে ফেলেছেন হেমা মালিনী ও ধর্মেন্দ্র। যখন হেমা ধর্মেন্দ্রর প্রেমে পড়েন তখন ধর্মেন্দ্র আগেভাগেই বিবাহিত ছিলেন প্রকাশ কৌরের সঙ্গে, তবে কোনও কিছুই বাধ সাধেনি এই সম্পর্কে।
যখন হেমা এবং ধর্মেন্দ্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তখনও হেমা খেয়াল রেখেছিলেন ‘কোনওভাবেই যেন এই বিয়ে কারুর আঘাতের কারণ না হয়’। আজ হেমা মালিনীর ৭২তম জন্মদিন। দেখতে দেখতে জীবনের আরও একটি বসন্ত পার করে ফেললেন হেমা।১৯৪৮ সালের ১৬ অক্টোবর তামিলনাড়ুর আমানকুডিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নিজের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে কী বলেছিলেন ড্রিম গার্ল, আজকের এই বিশেষ দিনে ফিরে দেখা সেই পুরোনো স্মৃতি।
গত বছর ডেকান কর্নিক্যালকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে হেমা বলেন- ‘আমি সেই মুহূর্তে ধরমজিকে দেখেছিলাম আমি জানতাম উনি সেই পুরুষ যাঁকে আমি আমার স্বপ্নে দেখেছি। আমার গোটা জীবন আমি ওঁনার সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলাম। তবে আমি এটাও খেয়াল রেখেছি যাতে এই বিয়ে কারুর দুঃখের কারণ না হয়। ওঁনার প্রথম স্ত্রী, সন্তানরা যেন কোনওদিন এটা না ভাবে আমি ওঁদের জীবনে কোনও হস্তক্ষেপ করছি। আমি ওঁনাকে বিয়ে করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু কোনওদিনও ওঁনার পরিবারের কাছে থেকে ধরমজিকে দূরে সরিয়ে দিইনি’।
খুব অল্প বয়সেই প্রকাশ কৌরকে বিয়ে করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। ধর্মেন্দ্র ও প্রকাশের চার সন্তান- সানি দেওল, ববি দেওল, এবং দুই কন্যা- অজিতা ও বিজেতা। ১৯৮০ সালের ২-রা মে হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র। তাঁদের দুই কন্যা- এষা দেওল ও আহানা দেওল।যদিও শুরু থেকে হেমার পরিবার এই বিয়ের বিরোধিতা করেছিল। কোনও বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করবেন হেমা, তা মেনে নিতে পারেননি অভিনেত্রীর বাবা। যদিও বাবার মৃত্যুর পর ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন হেমা মালিনী। তবে মসৃণ ছিল না এই প্রেম কাহিনিটা। একটা সময় অভিনেতা জিতেন্দ্রর সঙ্গে বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল হেমার। দুই পরিবারের মধ্যেও সব ঠিক ছিল। তবে বাধ সাধেন ধর্মেন্দ্র। একদিকে যখন তিরুপতি গিয়ে হেমাকে বিয়ে করার জন্য জোরাজুরি করছিলেন জিতেন্দ্র, ফোন করে ধর্মেন্দ্র হেমাকে সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করতে বলেন। এরপর ফোন আসে জিতেন্দ্রর দীর্ঘদিনের প্রেমিকা (বর্তমান স্ত্রী) শোভার। এরপরেই মন বদলান হেমা।
চলতি বছর করোনা আবহেই নিজেদের ৪১তম বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন হেমা ও ধর্মেন্দ্র। যদিও একসঙ্গে নয়, আলাদা-আলাদাভাবেই কেটেছে এই বিশেষ দিন। সেই সময় নিজের ফার্ম হাউজেই ছিলেন ধর্মেন্দ্র, অন্যদিকে মু্ম্বইয়ের বাড়িতে ছিলেন ড্রিম গার্ল।
হেমা মালিনী টুইটারে ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছিলেন, ধররজি এবং আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যাঁরা এই দিন আমাদের বিবাহবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আপনাদের আর্শীবাদ ও ভালোবাসায় আমাদের চলার পথের পাথেয়, সঙ্গে থাকার জন্য অশেষ ধন্যবাদ'।
শুধু বাস্তব জীবনেই নয় রুপোলি পর্দাতেও সুপারহিট জুটি ধরম-হেমা। সত্তরের দশকে শোলে, সীতা অউর গীতা, দিললাগি এবং ড্রিম গার্লের মতো ছবিতে একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে নিয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ৪০টিরও বেশি ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন এই পতি-পত্নী জুটি।