নিজের বোল্ড স্বভাবের জন্যই পরিচিত কালকি কোয়েচলিন। ছবি বাছাই হোক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন, কালকি সবসময়ই অনায়াস,আনকাট। মা হওয়ার পর কাজের সংখ্যা কমিয়েছেন, মেয়ে স্যাফোকে ঘিরেই তাঁর জগৎ, এর মাঝেই আমাজন প্রাইম ভিডিয়োর জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘মেড ইন হেভেন’-এর দ্বিতীয় সিজনে দেখা মিলবে কালকির।
পুদুচেরির অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারের মেয়ে কালকি। বাবা-মা দুজনেই ফরাসি। সাদা চামড়ার কালকির কাছে সহজ ছিল না সবার চেয়ে আলাদা হয়ে, সবার সঙ্গে বড় হওয়া। চামড়ার রঙের জেরে অনেক বাধা-বিপত্তির শিকার হয়েছেন তিনি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা দেওয়ার পরেও একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। মেয়েবেলায় অনেক সময়ই ড্রাগস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তেন কালকি। তাঁর কথায়, লোকে ভাবত সাদা চামড়ার কালকি নিশ্চয় ড্রাগস সেবন করে। তবে নিমেষেই সবার ধারণা বদলে দিলেন অভিনেত্রী। কীভাবে?
‘দ্য মেল ফেমিনিস্ট’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কালকি বলেন বয়ঃসন্ধির সময় পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ঠিক কেমন হয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমাকে সেইসময় প্রশ্ন করা হত, আমি ড্রাগস নিই কিনা। যেহেতু আমাদের গ্রুপের মধ্যে একমাত্র আমিই সাদা চামড়ার ছিলাম, লোকে ভাবত আমার পক্ষে আদর্শ ত্যাগ করা খুব সহজ হবে। হয়ত শ্বেতাঙ্গদের নিয়ে এমনই ধারণা জনমানসে রয়েছে, বেওয়াচ দেখে সবাই ভাবে সব সাদা চামড়ার মেয়েই ওরকম। পরমুহূর্তেই আমি তামিলে জবাব দিতাম, সবাই চুপ করে যেত। আক্কা (বোন) বলে সম্বোধন করত। হঠাৎ করেই আমার প্রতি তাদের ভাবনা বদলে যেত কারণ আমি ওদের ভাষা জানি'।
‘দেব ডি’, ‘মার্গারিটা উইথ এ স্ট্র’, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’, ‘দ্য গার্ল ইন ইয়ালো বুটস’-এর মতো ছবির অংশ থেকেছেন কালকি। অনুরাগ কশ্যপের প্রাক্তন স্ত্রী জানান বহুবার কাস্টিং কাউচের শিকার হয়েছেন তিনি। একই সাক্ষাৎকারে কালকি বলেন, ‘একটা ছবির জন্য আমি অডিশন দিয়েছিলাম, আমার খুব পছন্দ হয়েছিল চরিত্রটা। আমার কাছে ফোন আসে, যে প্রযোজকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। আমিও সাত-পাঁচ না ভেবে দেখা করতে যাই ওঁনার অফিসে। সেখানে উনি বলতে শুরু করেন, এটা তোমার কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ব্রেক হবে, এই-সেই। তারপর বলেন, আমি তোমাকে আরও ভালোভাবে জানতে চাই। আমরা কি ডিনারে যেতে পারি?’ প্রযোজকের ইশারা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগেনি কালকির। তিনি সপাটে জানান, ‘দেখুন আপনি যেমন ভাবছেন, আমি ওইরকম মেয়ে নই। আমি এইসব করব না’।
ইন্ডাস্ট্রিতে বহুবার বডি শেমিং-এর শিকারও হতে হয়েছে কালকিকে। ‘নায়িকাসুলভ সুন্দরী নই’, ‘মুখের চেয়ে দাঁত বড়’, লাগাতার ট্রোলড হয়েছেন অভিনেত্রী। এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘তখন আমার সবে ২৪ বছর বয়স। এক মেকআপ আর্টিস্ট বলেছিল, আমার চোখে আইলাইনার লাগাতে পারবে না, কারণ সেখানার চমড়া বড্ড কোঁচকানো’।