কলকাতাকে যেন কেউ ধরে জ্বলন্ত ওভেনে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আর ফুটন্ত তেলে তারপর নাগরিকদের এখন ভালো করে রোস্ট করছে প্রাণের প্রিয় শহর। সকাল আট বাজতে দেরি আছে, ছাদ তেতে উঠতে দেরি নেই। বাড়ির বাইরে কেন ঘরে বসেই বেশ একটা রাজস্থান রাজস্থান ফিল আসছে। দুপুরে ভুলক্রমে পথে বেরোলেও জনমানুষ্যির দেখা মিলছে না। এর মধ্যেও একদল মানুষ নিরলস খেটে চলেছে। তাঁদের মধ্যে আছেন টলিউডের শিল্পী থেকে কর্মীরা।
বিগত সাত বছরে এটাই সব থেকে গরম এপ্রিল মাস। কিন্তু হলে কি হবে, এই গরমে এখনও আউটডোর শ্যুটিং চালিয়ে যাচ্ছে বাংলার বিনোদন পাড়া। বিরাম নেই কাজের। একাধিক বাংলা ছবির শ্যুটিং চলছে এখন, আগামীতে শুরু হবে কিছু। এদিকে সূর্য রীতিমত চোখ রাঙাচ্ছে। বাংলা ছবির বাজেট বেশি হয় না এ কথা সবাই জানে। ফল হিসেবে অল্প দিনে অনেকটা আউটডোর শুট সারতে হচ্ছে এই তাপপ্রবাহের মধ্যে।
সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন মহিলা কলাকুশলীরা। নিজেদের হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি একাধিক সমস্যা সামলাতে হচ্ছে। আছে বাথরুমের সমস্যা, মেকআপ ভ্যানের সমস্যাও। সবটা মিলিয়ে বেশ কষ্টদায়ক পরিস্থিতি হলেও লড়ে যাচ্ছে ওঁরা।
গতকাল অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের নতুন ফিচার ফিল্ম প্রথম দিনের শুট ছিল কলকাতায়। দুপুর একটা থেকে ৪.৩০ পর্যন্ত ইকো পার্কে ছিল গোটা টিম। এই অবস্থায় কাজ করার বিষয়ে তিনি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান, ' কাজের মধ্যে একবার ঢুকে গেলে বাইরে দুনিয়া আমরা ভুলে যাই। কিন্তু সমস্যা হল এত রোদের তাপে ক্যামেরার লেন্সের ক্ষতি হচ্ছে, এক্সপোজার মেনটেন করতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এটা পোস্ট প্রোডাকশনে সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হবে। আমরা একটা ছায়া ঘেরা জায়গা দেখে কাজ করেছি এবং কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করেছি যাতে অতিরিক্ত তেতে যাওয়া আটকানো যায়।
এছাড়া ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাওয়ার ভয়ও থাকছে। তাছাড়া মহিলাদের জন্য বাথরুম বা মেকআপ ভ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় বাইরে বাথরুমে যেতে হচ্ছে। সকলের সামনেই এক প্রকার পোশাক বদলাতে হচ্ছে। ফলে সবটা মিলিয়েই নাজেহাল অবস্থা।
অন্যদিকে শ্রীরামপুর, ব্যারাকপুরের দিকে দেবী চৌধুরানীর শ্যুটিং সারছেন শুভ্রজিৎ মিত্র। এই ছবির প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, দর্শনা বণিক, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখকে দেখা যাবে। কলকাতায় যেহেতু ১৭৭০-১৭৮০ সালের তেমন বাড়ি দেখা যায় না তাই তাঁদের সেখানে গিয়েই শুট করতে হচ্ছে বলে জানান পরিচালক। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শুট করছেন তাঁরা। পরিচালক জানান, 'সবসময় গাড়ি করে লোকেশনে পৌঁছানো যাচ্ছে না। আমরা সঙ্গে করে প্রচুর জল আর ORS রাখছি। একবার এসি, একবার বাইরে বেরিয়ে কাজ করা বিষয়টাকে যেন আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।'