লোকসভা ভোটের আগেই বোমা ফাটাচ্ছেন তৃণমূলের একের পর এক তারকা সাংসদ। দেবের পর দলের অস্বস্তি বাড়ালেন মিমি। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে নিজের ইস্তফাপত্র দেন যাদবপুরের সাংসদ। মিমির সাফ কথা, রাজনীতি তাঁর জন্য নয়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে চান না, সেই কথাও জানান জোর গলায়। যদিও মিমির ইস্তফা গ্রহণ করেননি মমতা।
২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শুক্রবার বিকেলে সোশাল মিডিয়ায় সাংসদ খাতের অর্থাৎ এমপি ল্যাডের টাকার খরচের হিসাব দেখালেন মিমি। জানালেন গত ৫ বছরে যাদবপুরবাসীর উন্নয়নে ১৭ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করেছেন মিমি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে সমালোচকদের কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মিমি বলেছিলেন, ‘সাংসদ ফান্ডের কত টাকা কোথায় ব্যবহার হয়েছে, কোথায় কাজ হয়েছে, সেই তথ্য নির্দিষ্ট পোর্টালেই পেয়ে যাবেন। এক নম্বরে কার নাম রয়েছে, সেটা যাচাই করে নিন। আর সেটাই আমার গর্বের কারণ।’
সেই মতোই এদিন মিমি জানালেন, গত ৫ বছর ধরে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে কোথায় কত কোটি খরচ করেছেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ান দিয়েছেন তারকা সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে বিপুল ভোটে জিতেছিলেন টলি নায়িকা। এদিন ফেসবুক পোস্টে মিমি চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘আমার জীবন অধ্যায়ের অধিকাংশ সময় অভিনয় জগতে থেকে মানুষকে মনোরঞ্জন করেছি। কিন্তু বিগত ৫ বছর, বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতন্ত্রের একজন সাংসদ রূপে যতটা কাজ সাধারণ মানুষের জন্য করতে পেরেছি, মানুষের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, সৎপথে থেকে মাথা উঁচু করে এগিয়ে গেছি… সেই সফরের কথা মনে করলে মারাত্মক আত্মতুষ্টি হয়। তাই আনন্দের সাথে বিগত ৫ বছরের আমার সাংসদ রূপে যাবতীয় কাজের খতিয়ান আজ জনসমক্ষে তুলে ধরলাম।’
মিমির পেশ করা তথ্যানুসারে, বারুইপুর পশ্চিমের জন্য সাংসদ খাতের ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্য়ায় করেছেন মিমি, বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা এলাকায় ২ কোটি ২ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে মিমির এমপি ল্যাডের টাকার। দক্ষিণ সোনারপুরের জন্য সবেচেয়ে বেশি, ৫ কোটির বেশি টাকা খরচ করেছেন সাংসদ মিমি। অন্যদিকে টলিগঞ্জ ও যাদবপুর বিধানসভা এলাকার উন্নয়নে যথাক্রমে ব্য়ায় হয়েছে সাংসদ খাতের ৪ কোটি ২৫ লক্ষ এবং ১ কোটি ২৫ লক্ষাধিক টাকা।
শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে মিমি লেখেন, ‘আন্তরিক কৃতজ্ঞতা আমার নেত্রী, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে, তার স্নেহের হাত আমার মাথায় সর্বক্ষণ রাখবার জন্য। আগামী দিনে আমি সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, আমার কাজের মাধ্যমে আমি নিশ্চিতরূপে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় থাকব’। সবশেষে নিন্দকদের জন্য তাঁর বার্তা, ‘কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগোকা কাম হ্যায় কহনা’।
দলীয় কোন্দল ভুলে তবে কি রাজনীতির আঙিনায় ফিরবেন মিমি? আবারও লড়বেন তৃণমূলের টিকিটে? দেব ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের স্বার্থে ফের ভোটের ময়দানে নামতে প্রস্তুত তিনি। আর মিমি? উত্তরটা সময় দেবে।