শুরু আগেই কবিতা উৎসব ঘিরে বিতর্ক। উৎসব কমিটির একটা সিদ্ধান্ত ঘিরে তোলপাড় বাংলার সাহিত্য মহলের একাংশ। অনেক কবি, সাহিত্যিকই সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় কবিতা উৎসব কমিটির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। কেউ কেউ বিষয়টি ‘ফতোয়া’ বলেও কটাক্ষ করেছেন। পরিস্থিতি কিছুটা কঠিন হয়ে উঠতেই সামাল দিতে আসরে নামেন কবিতা অ্যাকাডেমির সভাপতি, কবি সুবোধ সরকার।
নিজের ফেসবুকের পাতায় বিশেষ পোস্টে কবিতা অ্যাকাডেমির সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়েছেন কবি সুবোধ সরকার। তিনি লেখেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরে আবৃত্তি সমাজ থেকে আপত্তি উঠছিল যে একই পরিবার থেকে একাধিক সদস্য কেন কবিতা উৎসবে অংশ নেবেন? স্বামী স্ত্রী ভাই বা বোন বা পুত্র কন্যা সবাই কেন একসঙ্গে অংশ নেবেন? এ বার কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় স্বামী স্ত্রীর যে কোনও একজন অংশ নেবেন। তাঁদের সম্মেলক দল যদি মনোনীত হয়ে থাকে, সেই দলকে আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে।সেই দলের পরিচালক হিসেবে তাঁর নাম থাকবে। কমিটির পক্ষ থেকে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কে এ বছর একক আবৃত্তি করবেন আর কে দল পরিচালনা করবেন। এই সিদ্ধান্ত কমিটি নেয়নি, নিয়েছেন সেই পরিবারের প্রধান।’
যদিও সুবোধ সরকারের এই পোস্টের পরও বিতর্ক থাকছে না। কিন্তু ঘটেছেটা কী?
কবিতা অ্যাকাডেমি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার আবৃত্তিকার দম্পতিদের কোনও একজন (স্বামী বা স্ত্রী) কবিতা উৎসবে পারফর্ম করতে পারবেন। পরিবারের দুজনকে উৎসবে পারফর্ম করার অুমতি দেওয়া হবে না। আর এরপরই বিতর্ক দানা বাঁধে। বিষয়টির বিরোধিতা করতে শুরু করেন কবি ও সাহিত্যিকদের একাংশ।
কবিতা অ্যাকাদেমির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করেন কবি ও অধ্যাপক অংশুমান কর। তাঁর কথায়, উৎসব কমিটি অংশগ্রহণের যে মানদণ্ড তৈরি করেছে, তা হাস্যকর। বিতর্ক দানা বাঁধে উৎসব কমিটির তরফে ফোন করে আবৃত্তিকার সুমন্ত্র সেনগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী রঞ্জনা সেগুপ্তের মধ্যে একজনকে পারফর্ম করতে বলার পর। প্রশ্ন ওঠে সুমন্ত্র সেনগুপ্ত বহুক্ষেত্রে সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়ার কারণেই এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত সুমন্ত্র সেনগুপ্ত ঘোষিতভাবেই তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী। দু'বছর আগে কবিতা উৎসবেই একটা বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।
যদিও বিষয়টি থেকে রাজনীতির প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ সুমন্ত্র সেনগুপ্ত। তিনি ফেসবুকে লেখেন, রাজনীতি তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ, কবিতা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান তাঁর শ্রদ্ধেয়। তাঁর সাফ কথা তিনি আর রঞ্জনা সেনগুপ্ত স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তো এতকাল আমন্ত্রণ পাননি। যে যাঁর মুন্সিয়ানায় এই আমন্ত্রণ পান।
যদিও সুমন্ত্র সেনগুপ্তের এই পোস্টের পরও বিতর্ক থাকছে না। এদিকে ৪-৬ জানুয়ারি থেকে কবিতা উৎসবের শুরু হতে চলেছে।