BHUBANESWAR : দেবব্রত মোহন্তি-
করোনার জেরে প্রায় একমাস ধরে দেশজুড়ে জারি রয়েছে লকডাউন। শ্যুটিংয়ের কাজ বন্ধ হয়েছে তারও আগে থেকে। তাই বিপাকে দেশের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির কলাকুশলীরা। বিশেষত সেই সব শিল্পীদের অবস্থা আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল নয় তাঁদের বেছে নিতে হচ্ছে জীবন ধারণের জন্য অন্য উপায়। প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ রবি কুমার। সংসারের দায়িত্ব সামলাতে লকডাউনের সময় ভুবনেশ্বরের রাস্তায় ঠেলা গাড়িতে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে এই কমেডিয়ানকে।পরিবারের ১১ জন সদস্যের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে তাই কার্যত বাধ্য হয়েই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন সবজি নিয়ে। এই প্রসঙ্গে রবি কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি লকডাউন কবে শেষ হবে সেইদিকে তাকিয়ে বসে থাকতে পারব না। যখন লকডাউন ঘোষণা হল তখন আমি ওড়িয়া ছবি বালির শ্যুটিং করছিলাম। আমি বরাবরই অভিনয়ের পাশাপাশি ট্রাক বা দেওয়াল রঙ করার কাজ করে থাকি, লকডাউনে সেগুলোও বন্ধ। উপায় না দেখে অবশেষে ভুবনেশ্বরের সামন্তারাপুর এলাকায় সবজি বিক্রি করছি’। মিমিক্রি আর্টিস্ট হিসাবে গোটা রাজ্যে পরিচিতি রয়েছে রবির। তবুও লকডাউনে ঠেলাগাড়িতে সবজি বিক্রি করেই পরিবারের মুখে অন্ন জোগাতে হচ্ছে তাঁকে।
প্রায় ৩০টি ওড়িয়া ছবিতে অভিনয় করেছেন রবি কুমার। কাজ করেছেন ১০টির বেশি ধারাবাহিকে। এই সময় দেওয়াল রঙ করবার বেশ কয়েকটি অফারও পেয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের নিময়ভঙ্গ হবে, সেই কারণে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। সবজি বিক্রির ক্ষেত্রে ছাড় থাকাতেই রোজগারের এই মাধ্যম বেছ নিয়েছেন অভিনেতা।
সকাল ১০টা পর্যন্ত বাজারের একটা নির্দিষ্ট জায়গায় সবজি বিক্রি করেন অভিনেতা। এরপর পড়ে থাকা সবজি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেলায় বিক্রি করেন। বিকালেও মাশরুম ও ডিম বিক্রি করছেন রবি কুমার। সবজি বিক্রির মঝেও তাঁর অভিনয় সত্ত্বা কিন্তু বজায় রয়েছে পুরোদমে। নানা পাটেকর, অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্রর মিমিক্রি করতে করতে সবজি বিক্রি করেন রবি। বাজারের অন্যসব সবজি বিক্রেতাদের থেকে এখানেই আলাদা তিনি।
লকডাউনের জেরে বিপাকে ওড়িয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষ। রাজ্যের সবচেয়ে বেশি ছবি মুক্তি পায় জুন মাসে রাজা ফেস্টিভ্যালের সময়। কিন্তু করোনার জেরে শ্যুটিংয়ের কাজ বন্ধ।কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তাও পরিষ্কার নয়। উদ্বেগের সুরে উত্কল সিনে চেম্বার অফ কর্মাস (ওড়িশার প্রোডিউসার গিল্ড)-এর তরফে জানানো হয়েছে, লকডাউন উঠলেও কতজন মানুষ সিনেমা হলে আসবেন আমরা নিশ্চিত নই, তাই অন্ধকারেই প্রায় ১০০০ টেকনিশিয়ান, ৮০০ প্রযোজক ও ডিস্টিব্রিউটার, ১৪০ সিনেমা হল মালিক ও তাঁর সংশ্লিষ্ট ১৬০০ কর্মীর ভবিষ্যত’।