ফের সংবাদ শিরোনামে শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রা ও তাঁর স্বামী। পর্নকাণ্ডের পর এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর নজরে তারকা দাম্পতি। শিল্পা শেট্টির নামে রেজিস্ট্রার জুহুর একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট সহ ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রার ৯৭.৭৯ কোটি টাকার সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বৃহস্পতিবার আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ অ্যাক্ট ২০০২-এর অধীনে এই কাজ করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
ইডি সূত্রে খবর, জুহুর ৮০ কোটির ফ্ল্যাট মাত্র ৩৮ কোটি টাকায় স্ত্রী শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রাকে বিক্রি করেন রাজ। ২০২২ সালে ঘরের মধ্যেই ওই বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিকানা বদল হয়। ইডির দাবি, রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই সম্পত্তি হাত বদল হয়েছিল। ইডির ধারণা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এই লেনদেনের গোটা প্রক্রিয়াটাই সাজানো এবং রাজ কুন্দ্রাই ওই ফ্ল্যাটের আসল মালিক। এই মামলায় ইতিমধ্যেই ইডির নজরে শিল্পা শেট্টিও। খুব শিগগির নাকি ইডি ডেকে পাঠাবে নায়িকাকে, তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে।
গোটা ঘটনায় মুখে কুলুপ রাজ-শিল্পার জনসংযোগ আধিকারিকদের। তবে তাঁদের আইনজীবী প্রশান্ত পাটিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করব এবং আমার মক্কেলদের স্বাধীনতা ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিধান অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। আপাতদৃষ্টিতে আমার মক্কেল রাজ কুন্দ্রা ও শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রার বিরুদ্ধে কোনও প্রাথমিক মামলা নেই। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে'। কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন রাজের আইনজীবী।
পাটিল আরও বলেন, ‘আমার মক্কেল রাজ কুন্দ্রা অভিযুক্তদের কাছ থেকে কোনও বিট-কয়েন পাননি, যেমনটি অভিযোগ করা হয়েছে’। ইডির দাবি, ইউক্রেনে বিটকয়েন খনি প্রকল্পের জন্য প্রয়াত মাস্টারমাইন্ড অমিত ভরদ্বাজের কাছ থেকে ২৮৫টি বিটকয়েন পেয়েছিলেন রাজ কুন্দ্রা। এই ২৮৫টি বিটকয়েনের বর্তমান মূল্য প্রায় ১৫০ কোটি।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক সংস্থা ভেরিয়েবল টেক পিটিই লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত ৬,৬০০ কোটি টাকার বিটকয়েন-ভিত্তিক পঞ্জি স্কিমের তদন্তের অংশ হিসাবে ইডির সংযুক্তিগুলি করা হয়েছিল। বিটকয়েন একটি রূপান্তরযোগ্য ভার্চুয়াল মুদ্রা, তবে ভারতে আইনী টেন্ডার নয় এবং এর খনির নতুন কয়েন তৈরি করতে এবং নতুন লেনদেন পরীক্ষা করতে বিটকয়েন এবং অন্যান্য ক্রিপ্টো-মুদ্রা দ্বারা ব্যবহৃত পদ্ধতিকে বোঝায়।
ইডির তদন্তে জানা গেছে যে ভেরিয়েবল টেক পিটিই লিমিটেড উচ্চ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহারাষ্ট্র-সহ সারা দেশে নিরীহ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৬,৬০৬ কোটি টাকা (২০১৭ সালের হার অনুযায়ী) মূল্যের ৮০,০০০ বিটকয়েন সংগ্রহ করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সংগৃহীত তহবিলগুলি তখন বিদেশে অবস্থিত নয়টি সংস্থার মাধ্যমে বিদেশী সম্পত্তি কেনার জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং বিনিয়োগকারীরা তাঁদের রিটার্ন পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রয়াত অমিত ভরদ্বাজ, অজয় ভরদ্বাজ, বিবেক ভরদ্বাজ, সিম্পি ভরদ্বাজ, মহেন্দ্র ভরদ্বাজ এবং বেশ কয়েকজন এমএলএম এজেন্ট সহ ভেরিয়েবল টেক পিটিই লিমিটেড এবং তার প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র ও দিল্লি পুলিশের দায়ের করা একাধিক মামলার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। বিনিয়োগকারীদের তহবিলগুলির টাকা নিজেদের অনলাইন ওয়ালেটগুলিতে লুকিয়ে রাখেন অভিযুক্তরা। এই মামালার মূল অভিযুক্ত অজয় ভরদ্বাজ এবং মহেন্দ্র ভরদ্বাজ পলাতক রয়েছেন।