ওম রাউতের ‘আদিপুরুষ’ মুক্তি পেয়েছে মাত্র কয়েকটি দিন হয়েছে। এর মধ্যেই একাধিক বিতর্কে নাম জড়িয়েছে এই ছবির। দেশ জুড়ে বয়ে চলেছে সমালোচনার ঝড়। ছবির নির্মাতা থেকে অভিনেতাদের বারংবার পড়তে হয়েছে কটাক্ষের মুখে। এবার এই ছবির সমালোচনা শোনা গেল ছোট পর্দার লক্ষ্মনের মুখে।
১৯৪৭ সালে ছোট পর্দায় যে রামায়ণ সম্প্রচারিত তা আজও মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছে। কালজয়ী হয়ে উঠেছে সেই ধারাবাহিক। এখানে লক্ষ্মণের চরিত্রে অভিনয় করতেন অভিনেতা সুনীল লহরী। তিনি এবার ‘আদিপুরুষ’ দেখে এসে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। বললেন তিনি রীতিমত বীতশ্রদ্ধ এই ছবি দেখে।
তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন এই ছবিতে অনেক গ্রাফিক্সের কারিগরি আছে। দেখলে মনে হবে যেন কোনও আঁকা ছবির দেখছি। কিন্তু আদতে, গল্প অনুযায়ী, ইমোশনের দিক থেকে এখানে কিছুই নেই। তাঁর কথায়, 'আমি বুঝতেই পারলাম না এই ছবি কাদের জন্য বানিয়েছেন নির্মাতারা? কেনই বা বানিয়েছেন? এখানে না আছে গল্প, না আছে চরিত্র, না আছে অন্য কিছু। আলাদা কিছু করতে দেখাতে গিয়ে পুরোটাই নষ্ট করে ফেলেছে।'
ইতিমধ্যেই এই ছবির ডায়লগ থেকে দৃশ্যায়ন সবটাই প্রশ্ন এবং সমালোচনার মুখে পড়েছে। হনুমানের মুখে যে সংলাপ বসানো হয়েছে তাতে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সকলে। আর এমন এক মহাকাব্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর, সেই ধারাবাহিক অত সুখ্যাতি পাওয়ার পর একই গল্প নিয়ে যখন ছবি বানানো হল সেটা দেখে স্বাভাবিক ভাবে অন্যান্যের তুলনায় আরও বেশি বিরক্ত বোধ করেছেন সুনীল।
তিনি এই ছবির প্রতিটি চরিত্রের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, 'রাম লক্ষ্মণের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তাঁদের দেখতে এক লাগছিল, তাঁরা কাজও এক করছিল। মেঘনাদের সারা গায়ে অত ট্যাটু দেখানো প্রয়োজনীয়তা কী ছিল? রাবণকে অকারণ কামার বানানোর প্রয়োজন কী ছিল বুঝলাম না।' একই সঙ্গে তিনি রাবণের চুলের কায়দার সমালোচনা করে বলেন, 'বিরাট কোহলির মতো রাবণের চুলের কাট! এটা সত্যি অত্যন্ত লজ্জাজনক।'
তিনি একই সঙ্গে গল্পে এত পরিবর্তন দেখানো হয়েছে যে সেটা নিয়েও মুখ খোলেন। বলেন, 'গল্পের কিছু জিনিস কখনই বদলানো উচিত নয়। রাবণের পুষ্পক রথ ছিল। এখানে কোথা থেকে একটা বদখত দেখতে বাদুর এল বুঝলাম না। তাছাড়া হনুমানের পিঠে চড়ে রাম কবে যুদ্ধ করেছিল? জলের মধ্যে কবেই বা লক্ষ্মণ মেঘনাদকে মারল?'
মোদ্দা কথা, ওম রাউতের ‘আদিপুরুষ’ যে সুনীলের একদম পছন্দ হয়নি সেটা তাঁর কথা থেকেই স্পষ্ট। তিনি এই ছবির প্রতিটা অংশ নিয়ে ঠিক ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। করেছেন যথাযথ সমালোচনাও।