বলিউডের সব সুন্দরীকেই সাজিয়েছেন তিনি। মাধুরী থেকে করিনা, প্রিয়াঙ্কা, দীপিকা থেকে হারনাজ সান্ধু-- সকলেই তাঁর নকশাকাটা পোশাকে তাক লাগিয়েছেন। কিন্তু দু'বছর আগে নিজেকে একদম অন্য়রূপে সাজিয়েছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার স্বপ্নিল শিন্ডে। ইনস্টাগ্রামে জোর গলায় জানিয়েছিলেন, শরীরে পুরুষ হলেও মনেপ্রাণে তিনি নারী। সেই কারণেই ‘ট্রান্স ওম্যান’ হিসাবে নিজের পরিচয় করান স্বপ্নিল, নাম বদলে রাখেন সাইশা।
এরপর লম্বা সময় কেটেছে। রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চে সাইশাকে কাছ থেকে দেখেছে দর্শক। সদ্য় সমাপ্ত ল্যাকমে ফ্যাশন উইকের শেষদিন নতুন সাইশা পেশ করলেন তাঁর স্প্রিং সামার কালেকশন। আগেও বহুবার এই বিখ্যাত ফ্যাশন উইকে নিজের ডিজাইন তুলে ধরেছেন সাইশা, তবে তখন স্বপ্নিল হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ট্রান্স ডিজাইনার হিসাবে এই প্রথমবার ঐতিহ্য়বাহী ল্যাকমে ফ্যাশন উইকে নিজের ফ্যাশন কালেকশন প্রদর্শন করলেন সাইশা। মার্জার সরণিতে কাশ্মীরকে তুলে আনলেন ডিজাইনার, যা নিয়ে রীতিমতো ভয়ে ছিলেন শিল্পী।
সাইশার কথায়, ‘খুব ভয়ে ছিলাম। কারণ আমি জানতাম সবার নজর আমার উপর থাকবে। গত কয়েক মাসে আমি উপলব্ধি করেছি আমি ঠিক চাপ নিতে পারি না। তবে সৌভাগ্যবশত আমার টিম আমাকে সবসময় সাপোর্ট করেছে, কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে’।
দীপিকা পাড়ুকোনের পাঠানের একটা আউটফিট ডিজাইন করতে গিয়ে এই কালেকশনের ভাবনা মাথায় আসে সাইশার। তাঁর কথায়, কাশ্মীরের সঙ্গে তাঁদের মতো রূপান্তকারকামীদের অনেক মিল রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর (অস্তিত্বের) লড়াই করেছে, তবে একই একসঙ্গে এটা ভীষণ সুন্দর। আর সেটাই এই দেশে রূপান্তরকামীদের অবস্থান, তাঁরাও সুন্দর তবে অস্তিত্বের লড়াই জারি রয়েছে’।
কীভাবে নিজের আসল অস্তিত্বকে খুঁজে পেলেন? দু-বছর আগে সাইশা জানিয়েছিলেন, NIFT-তে যোগদানের পর তাঁর জীবন বদলে যায়, সেইসময় সবে কুড়ি পার করেছেন তিনি। শুরুর দিকে স্বপ্নিল ভাবতেন, তিনি ছেলেদের পছন্দ করেন- সুতরাং তিনি সমকামী। ইনস্টা পোস্টে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘মাত্র ৬ বছর আগে আমি নিজেকে বুঝতে পারি। …. আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি, আমি সমকামী নই। আমি একজন রূপান্তরকামী’।
মধুর ভান্ডারকরের ফ্যাশন (২০০৮) ছবির সঙ্গে লাইমলাইটে উঠে এসেছিলেন স্বপ্নিল। অ্যাওয়ার্ড শোয়ের লাল গালিচা থেকে ছবির লুক- বি-টাউনের লিডিং লেডিদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন স্বপ্নিল (সাইশা)।