মার্চ মাসের ১৮ তারিখ থেকে টলিগঞ্জে ছিল তালাবন্ধ। প্রায় তিনমাস করোনার জেরে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের রব উঠেনি ভারতলক্ষ্মী, এনটিওয়ান, টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। সরকারি অনুমতি মেলবার পরেও শ্যুটিং শুরু করতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ, প্রযোজক, এবং শিল্পীদের। অনেক মিটিং, মন কষাকষির পর গত মাসেই শ্যুটিং শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকগুলির। যার জেরে ১৫ জুন থেকে আবার নিময় মেনে টিভির পর্দায় ফিরেছিলেন রাণী রাসমণি,শ্রীময়ী,কৃষ্ণকলিরা।
তবে টলিগঞ্জে শুক্রবার সকালে আচমকাই ছন্দপতন। এদিন সকালে বন্ধ হয়ে যায় জি বাংলা ও সান বাংলা চ্যালেনের সিরিয়ালগুলির শ্যুটিং। না, এই শ্যুটিং বন্ধের পিছনে দায়ি নয় মহামারী করোনা। বরং এই শ্যুটিং জটের পিছনে রয়েছে অন্য কারণ। শ্যুটিং বন্ধের ফতেয়া কেন? জানা গিয়েছে টাকাপয়সা নিয়ে ফেডারেশন আর চ্যানেলের পারস্পরিক বিবাদের জেরেই এদিন বন্ধ হয় শ্যুটিং। কীসের টাকা নিয়ে এই বিবাদ? চ্যানেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন করোনার সময়ে চ্যানেলগুলি ব্যক্তিগত উদ্যোগেই টেকনিশিয়ানদের এককালীন কিছু টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। দৈনিক আয় বা পার ডে'র পেমেন্ট হিসাবে কাজ করেন যে সব টেকনিশিয়ানরা তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ এখনও সেই টাকা মেটায়নি জি বাংলা ও সান বাংলা। তাই শুক্রবার আচমকাই কর্মবিরতি।চ্যানেলের সাফাই ওই টাকা আসবে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর)-র মাধ্যমে যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ, তাই শ্যুটিং বন্ধের সিদ্ধান্তটা নেহাত মূর্খামি কারণ এতে চ্যানেলে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপিত স্বরূপ বিশ্বাস আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, চ্যানেলে রোজই টালবাহানা করেছে। নির্দিষ্ট কোনও দিন ঘোষণা করছে না। সেই দিন জানালেই কাজ শুরু হবে। এরপর ফেডারেশন সম্পাদক অপর্ণা ঘটক পরে সংবাদমাধ্যমে জানান, শ্যুটিং বন্ধ নয় সাময়িক কর্মবিরতি করা হয়েছে মাত্র। দিন গড়াতেই জি বাংলার তরফে লিখিতভাবে জানানো হয় আগামী ৭ই অগস্টের মধ্যে টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। এরপর জি বাংলা সিরিয়ালের সেটে আলো জ্বলে। যদিও সান বাংলা চ্যানেলের তরফে এখনও কোনওরকম সবুজ সঙ্কেত না মেলায় বন্ধই আছে শ্যুটিং।
শুধু অতিমারির এককালীন টাকাই নয়, অভিযোগ কোভিড-১৯ বিমার বিষয়টাও সম্পূর্ণ করেনি চ্যানেলগুলি। তাতে বেশ খানিকটা শঙ্কায় কলাকুশলীরা। ইতিমধ্যেই বাংলা ধারবাহিকের সঙ্গে যুক্ত কমবেশি ১৫ জন কলাকুশলী করোনা আক্রান্ত। তাই কিছুটা হলেও আতঙ্ক কিন্তু কাজ করছে।