শ্রীলা মজুমদার আর নেই এই খবরে বাংলা অভিনয় দুনিয়ায় শোকের ছায়া। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না আচমকা অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর। এবিষয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় গলা ধরে এল অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের। শ্রীলা মজুমদারকে ‘দিদি’ বলতেন ঋতুপর্ণা।
ধরা গলায় ঋতুপর্ণা বলেন, ‘আমার দিদি চলে গেল। কিন্তু মনে হয়না এই কথাটা কখনও আমি বলতে পারব, যে দিদি নেই। আমার দিদি আমার মধ্যে, আমার ভিতরে সবসময় শক্তি জুগিয়েছেন। এই মানুষটা চিরকাল আমায় বলেছেন, ঋতু তুমি কখনও থামবে না, কখনও ভাঙবে না, সবসময় এগিয়ে যাবে। যত প্রতিকূলতাই আসুক। আমার দিদির কথাগুলো আমার কানে বাজবে…’ বলতে বলেই কেঁদে ফেললেন ঋতুপর্ণা।
আরও পড়ুন-নক্ষত্রপতন! ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধে হার মানলেন অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার
আরও পড়ুন-কপালে সিঁদুর লেপা, বোনকে নিয়ে কামাখ্যায় ভূমি, সিংহের কানে জানালেন কোন ইচ্ছার কথা?
ঋতুপর্ণা ফের বলেন, ‘এত স্নেহ, ভালোবাসা, মমতা এই দিদি আমায় দিয়েছেন, যে কোনওদিনই বুঝিনি যে আমার নিজের কোনও দিদি নেই। শ্রীলা মজুমদারই আমার নিজের দিদি।’ ঋতুপর্ণা আরও বলেন, ‘পথিতযশা অভিনেত্রী উনি, এত বিখ্যাত বিখ্যাত কাজ উনি করেছেন, ওঁর অভিনয়ের কথা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে। বিখ্যাত মানুষদের সঙ্গে কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক স্তরের পরিচালকদের সঙ্গে ওঁর কাজের নজির রয়েছে। আমি খুবই ক্ষুদ্র ওঁর বিষয়ে কিছু বলার জন্য। একটা কথাই বলব, শ্রীলা মজুমদারের মতো অভিনেত্রী আমাদের সিনেমার দুনিয়ায় বিরল। শ্রীলা মজুমদার একটাই ছিলেন, থাকবেন। শেষ কয়েকটা দিন অনেক লড়াই করেছেন, কষ্ট পেয়েছেন।'
তাঁকে বলে যাওয়া অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমাদের কিছু কথা মনে করে ঋতুপর্ণা বলেন, উনি সবসময় বলতেন, 'জানিস ঋতু, আমি ভালো হয়ে যাব। আর হয়ত কয়েকটা দিন, ৩০দিন আমায় ডাক্তার রেস্ট নিতে বলেছেন, তারপরই কিন্তু তোর সঙ্গে আমি ওই কাজটা করব। আবার তোর ওই কাজে আমি ভয়েস ওভার দেব। আমাদের কিন্তু বাইরে অনেক কাজ করতে হবে, অনেক অনুষ্ঠান করতে হবে…’।
ফের ঋতুপর্ণা বলেন, ‘একসঙ্গে কত অনুষ্ঠান করেছি, কত ছবি করেছি। পরবর্তীকালে মনটা ভেঙে গিয়েছিল, হয়ত ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকের কাছে অনেক অভিমান জমা ছিল। তবে বারবার বলতেন, তুই তো আছিস, দেখ আমি কত কাজ করছি। যাঁরা শ্রীলাদির বন্ধু হিসাবে পাশে ছিলেন, এই শিল্পীর মূল্যায়ন করেছেন, তাঁদের আমি সবসময় সম্মান করব, সারাজীবন। কারণ ওঁর মতো অভিনেত্রী, মানুষ, আর ওই ভুবন ভোলানো মধুর কণ্ঠ আর কোনওদিনও হবে না। লাভ ইউ শ্রীলাদি, তুমি থাকবে আমাদের কাছে, চিরদিন, চিরকাল অমর হয়ে, আমার দিদি হয়ে।’