নিজের মনের কথা প্রকাশ্যে আনতে দ্বিধা করেননি অভিনেত্রী শ্রীলেখা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও। নিন্দকদের দাবি, শ্রীলেখা নাকি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, বড্ড ঠোঁটকাটা। যদিও শ্রীলেখার নিজের বিশ্বাস তিনি নিছকই সত্যি কথা বলেন। মনের মধ্যে থাকা কথাটা তুলে ধরেন সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না, সেই পোস্টের মধ্যে থাকা ‘রস’।
বছরকয়েক আগে, ঋতুপর্ণা লাইভে এসে দাবি করেছিলেন, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার জুটি একসময় টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অনেকেরই ভাত কেড়েছে। এই নিয়ে সম্প্রতি কথা বললেন নিবেদিতা অনলাইনের সঙ্গে। ঋতুপর্ণার বলা একটি কথা তুলে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল শ্রীলেখার কাছে। যেখানে ঋতুর বলা কথা, ‘আমি তো ১৫ বছর বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করিনি, তখন কেন শ্রীলেখা কাজ করল না প্রসেনজিতের সঙ্গে’, সামনে আনা হয় তাঁর। জানতে চাওয়া হয় কী মত। তাতে শ্রীলেখার স্পষ্ট জবাব, ‘আমরা প্রায় একসময়ই ছবি করা শুরু করি, তখন তো ওদের (প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা) প্রেমটা ছিল। সেই সময় ব্যাপারটা আজকের মতো ছিল না। প্রযোজক হিরোর কাছে আসত। সেই সময় হিরো শুধু নায়িকা নয়, চরিত্রাভিনেতাদের নামও বলে দিত। এটাই পাওয়ার গেম। এখন তো আর সেটা সম্ভব নয়। এটা সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। মানুষ এসব করার আগে পাঁচবার ভাববে। মি টু-ফি টু, এত কিছু হয়ে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিখ্যাত রেস্তোরাঁর রেড রাইস-বাঁশপোড়া মটন, স্বাদ নিলেন সৌরভ দাদাগিরিতে, দাম কত খাবারটির?
তবে শ্রীলেখা স্পষ্ট করে দেন, কখনও কোনও কুপ্রস্তাব আসেনি তাঁর কাছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। যা বাজারে চলেছে, তা সবটাই রটনা। বললেন, ‘একটা ব্যাপার হয়ে গিয়েছে…বুম্বাদা আমাকে কোনওরকম প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই, বুম্বাদা আমাকে কোনওদিন কোনওরকম কুপ্রস্তাব দেয়নি। আমি সেই সময় শুধু কাজ করতাম। কাজের পরে আড্ডাটা মারিনি। ফলে কারও কোনও গুড বুকে ছিলাম না, কারণ আমি মনে করতাম কাজ করাই আমার পিআর। আমি আজ পর্যন্ত কোনওদিন প্রেস ডেকে বড় করে জন্মদিনও পালন করিনি।’
‘সে কতবছর কাজ করেছে, বা করেনি, এগুলো আমার সিলেবাসের বাইরে। যে এটা বলেছে, সে খুব ভালো করেই জানে, সে কীভাবে কাজ করে। ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই জানে, তাঁরা কীভাবে কাজ করে। আমি কারও নাম নিতে চাই না।’, আরও যোগ করেন শ্রীলেখা।
আরও পড়ুন: চেরা ভ্রু, নতুন হেয়ারস্টাইল! কত খরচ করেছেন বিরাট তাঁর IPL লুকের জন্য, খোলসা করল হেয়ারড্রেসার
একটা সময় হাতে কোনও কাজ ছিল না শ্রীলেখার। তখন স্বামীর থেকে আলাদা হয়েছেন। এক জীবনযুদ্ধের মাঝেই, আরেক চ্যালেঞ্জ। বললেন, ‘আমি হঠাৎ মোটা হয়ে গেলাম কী করে। বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিই তো না। বাড়িতে খাচ্ছি-দাচ্ছি-ঘুমোচচ্ছি। আমার পক্ষে তো তখন গিয়ে আর নতুন কোনও ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা সম্ভব ছিল না। ততদিনে আমি অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। আমার পক্ষে তো অটো বাস করে অন্য কোনও অফিস করা সম্ভব ছিল না। রীতিমতো হিসেব করে সংসার চালাতে হত।’
সবশেষে শ্রীলেখা স্পষ্ট করে দেন, ‘আমাকে স্পনসর করার কেউ নেই। আমি মনে করি, আমার কাজের প্রতি আমার নিজের যে সম্মান সেটাই চলে যাবে যদি অন্য কোনও উপায় অবলম্বন করি। আর কাজের ব্যাপারে খুব অহংকারী। আজকের দিনে সেভাবে কাজ না পাওয়া নিয়ে অভিনয় বা দুঃখ কিছুই নেই আমার। দিনের পর দিন যখন কাজ ছিল না… চাইলেই হয়তো সিরিয়াল করতে পারতাম। আমার কোনওদিন কোনও পিআর ছিল না। আমার মনে হয় না, কেউ বলবে আমি কোনও প্রোজেক্টে বাজে অভিনয় করেছি। ইন্ডাস্ট্রির যারা কাজ করে, প্রশ্নটাতো তাঁদের করা উচিত (কেন আরও বেশি সিনেমায় দেখা যায় না শ্রীলেখাকে?)।’
আরও পড়ুন: শেষবয়সে লুকোচুরি, আসেননি লোকচক্ষুতে! কেমন দেখতে ছিলেন সুচিত্রা সেইসময়, খোলসা বোনঝির
লাইভে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার নাম উল্লেখের ব্যাপার প্রসঙ্গে শ্রীলেখা আরও জানালেন, ‘সুশান্তের মৃত্যুর পর আমি এই ভিডিয়োটা করেছিলাম। ওটা আমাকে খুব ট্রিগার করেছিল। আরও অনেকের সঙ্গেই হয় এরকম। অনেকেই বলে, তোর বলার কী দরকার। কিন্তু আমি মনে করি, বলার দরকার আছে। আমি আসলে কোনওদিন কাজের জন্য কম্প্রোমাইজ করিনি। আমার কাছে কতগুলো কাজ করলাম তা ম্যাটার করে না। বরং কাজটা কেমন করলাম সেটা গুরুত্বপূর্ণ।’