খাবার অপচয় বন্ধ করতে, এক খাবারেই করবেন চার পদ। এমন ভাবনা নিয়েই পথ চলা শুরু করেছিলেন কলকাতার দুই যুবক। মধ্যবিত্ত বাঙালির অনেকগুলো স্বপ্ন বা ইচ্ছের মধ্যে একটি হল নিজের ব্যবসা শুরু করা। কিন্তু অফিসের জাঁতাকল, অসম্ভব চাপ সামলে সেটা অনেকেই পূরণ করতে পারেন না, কিন্তু যদি বন্ধুর সাপোর্ট থাকে? তাহলে অসম্ভবও সম্ভব হয়। আর সেই অসম্ভবকে বাস্তব করে সোজা শার্ক ট্যাঙ্কে পৌঁছে গিয়েছিলেন শুভব্রত এবং সৌপল।
শুভব্রত গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌপল দে বর্তমানে দুজনেই এইচএসবিসিতে আছেন। তাঁরা তাঁদের অফিস সামলে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, ভরা লকডাউনের মধ্যে নিজেদের ব্যবসা শুরু করেন। কালীঘাটের একটি ছোট্ট ঘর থেকে পথ চলা শুরু হয়ে তাঁদের। ব্র্যান্ডের নাম ক্রেভ রাজা ফুডস। এটি একটি মাল্টি ব্র্যান্ড ক্লাউড কিচেন। ক্লাউড কিচেন বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত কিন্তু এই মাল্টি ব্র্যান্ড ক্লাউড কিচেন বিষয়টা কী ভাবছেন? তাঁদের এই ক্রেভ রাজা ফুডস হচ্ছে মাদার ব্র্যান্ড। এর মধ্যে আরও কয়েকটি সাব ব্র্যান্ড আছে, যেমন গাস্টোপিৎজা ইন্ডিয়া, এসওএস স্যান্ডউইচ অমলেট, ইত্যাদি। এবার এগুলোর কাজ কী? ধরা যাক চিকেন টিক্কা আছে। এবার এটি একটাই পদ। কিন্তু এই দুই যুবক এই একটা পদ দিয়েই স্যান্ডউইচ বানাচ্ছেন আবার পিৎজা বানাচ্ছেন আবার র্যাপ তৈরি করছেন। মানে খাবারের মূল উপকরণ একটাই, খালি ফর্ম বা শেপ বা ধরন বদলে যাচ্ছে। এতে কী হচ্ছে? আপনার যেমন খাবার পছন্দ তেমনটা পেয়ে যাচ্ছেন, আবার খাবার অপচয় হচ্ছে না। অর্থাৎ এক ঢিলে দুই পাখি।
অস্থির সময়েও পথ চলা শুরু করে প্রথম বছরই ফাটাফাটি প্রতিক্রিয়া পান শুভব্রত এবং সৌপল। কলকাতাতেই তাঁরা আরও দুটি আউটলেট খুলে ফেলেন, সন্তোষপুর এবং বেলেঘাটায়। ব্যবসা করেন ২.৫ কোটি টাকার। দ্বিতীয় বছরেও তাঁদের ব্যবসা বেড়ে প্রায় ৩ কোটি ছুঁয়ে ফেলেছে। বেড়েছে আউটলেট সংখ্যাও। ব্যাঙ্গালুরুতে নতুন আউটলেট খুলেছেন তাঁরা। চেন্নাই, হায়দ্রাবাদে শীঘ্রই নতুন শাখা খুলবে ওঁদের ব্র্যান্ডের।
আর এই ব্র্যান্ড নিয়েই ফান্ড রেইজ করতে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন শার্ক ট্যাঙ্কে। শার্কদের তাঁদের ভাবনা ব্যাপক মনে ধরে। প্রশংসা পায় ভাবনা। কিন্তু ফান্ড? সেটা এল কী? এটা আজকের পর্বে দেখা যাবে। দুই কর্মরত যুবক নিজেদের সংস্থার জন্য কত ফান্ড পেলেন। বা আদৌ পেলেন কিনা।
শুভব্রতর কথায়, 'শার্ক ট্যাঙ্কে কী হল সেটা আজ সবাই দেখতে পাবেন। তবে এখানে গিয়ে আমাদের লাভ হয়েছে। আরও অন্যান্য বহু ইনভেস্টমেন্ট পেয়েছি আমরা।'