এপ্রিল মাসে অমিত ভাটিয়ার সঙ্গে বিয়ের পর্ব সেরেছিলেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের দিদি দেবশ্রী। তবে দু-মাস যেতে না যেতেই আমচকা ছন্দপতন দাম্পত্য সম্পর্কে। দেবশ্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল (শুক্রবার) অমিত ভাটিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গোটা বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন দেবশ্রী। বিয়ের মাত্র কয়েক মাসেই এই অঘটন কীভাবে ঘটল? দেবশ্রীর কথায় গোটা পরিস্থিতি নিজেও এখনও সামলে উঠতে পারেননি তিনি। শুরুর দিকে বুঝতেই পারছিলেন না কী করবেন! বিয়ের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই স্বামীর আসল চেহারাটা প্রকাশ্যে আনতে কিন্তু বোধ হচ্ছিল তবে একটা ঘটনা পালটে দিয়েছে সবকিছু।
দেবশ্রী আনন্দবাজারকে জানান, নিজের বয়স্ক-বাবা মায়ের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে শুরুর দিকে চুপ ছিলেন তিনি। স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করে নিলেও যখন দেবশ্রী জানতে পারেন অমিত ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত তখন চুপ থাকতে পারেননি।সবটা খুলে বলেন শুভশ্রী ও জামাইবাবু রাজ চক্রবর্তীকে। তাঁরা পাশে দাঁড়াতেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন দেবশ্রী।
১৭ তারিখ রাতে টেকনোসিটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর বড় শ্যালিকা, দেবশ্রী। অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল পুলিশ গ্রেফতার করে অমিত ভাটিয়াকে। দেবশ্রী জানিয়েছেন, সাত বছর ধরে একে অপরকে চেনেন তাঁরা। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রেম দিসবের দিন দেবশ্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অমিত। ২রা এপ্রিল বিয়ের পরই দেবশ্রীর সব গয়না নিজের হেফাজতে রেখে দেন শাশুড়ি দীপালি ভাটিয়া। কাজের প্রয়োজনের নাম করে দেবশ্রীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকাও নাকি হাতিয়ে নেয় অমিত। শাশুড়ি বাগুইহাটির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন, অন্যদিকে স্বামী, প্রথমপক্ষের সন্তান ও পোষ্যকে নিয়ে অন্য ফ্ল্যাটে থাকতেন দেবশ্রী। গয়না, টাকা নেওয়ার পরেও কোনওরকম সন্দেহ হয়নি দেবশ্রীর। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘বিয়ের ৭ দিন কাটতে না কাটতেই মানসিক অত্যাচার শুরু করে অমিত। মাঝে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম। অসুস্থ অবস্থায় স্বামীর হাতে মার খেতে হয়েছিল’।
দেবশ্রী জানান, শাশুড়ির কাছে ছেলেকে বোঝানোর আবেদন রেখে অশ্রাব্য গালিগালাজ শুনতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি তার বাবা জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁকে চরম অপমানিত হতে হয়। এরপর দেবশ্রী জানতে পারেন, অমিতের উপর এক ২০ বছর যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি যাচাই করতে নিজে ওই নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলেন দেবশ্রী। স্বামীর কুকীর্তির কথা জেনে চুপ থাকতে পারেননি তিনি। শুভশ্রীর দিদি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘। সব শুনে স্বার্থপরের মতো নিজের ঘর বাঁচাতে পারলাম না। ওই মেয়েটিও অমিতের মায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন। বুঝলাম, মা-ছেলের এটা এক ধরনের ব্যবসা'।
নিজে সুবিচার চান দেবশ্রী, পাশাপাশি ও নির্যাতিতা মেয়েটিও সুবিচার পাক এমনটাই প্রার্থনা দেবশ্রীর। আইনের উপর ভরসা রাখছেন তিনি। তবে ভবিষ্যতে সহজে কারুর উপর বিশ্বাস করতে পারবেন না দেবশ্রী, সেই আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।