পজিটিভিটি বলুন কিংবা সাহস অথবা ছক ভাঙা সবেতেই এগিয়ে থাকেন সুস্মিতা সেন। নিজের জীবন দিয়ে, কাজ একাধিক বার তিনি তাঁর সাহস, স্পর্ধার, ছক ভাঙার নেশার পরিচয় দিয়েছেন। আর এসব কিছুই তিনি করেছেন তাঁর মনের কথা শুনে। সুস্মিতা সেন ১৯৯৪ সালে মিস ইউনিভার্স খেতাব জয় করে বলিউডে পা রাখেন। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি ‘দস্তক’। তবে ১৯৯১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বিবি নম্বর ১’ ছবির পর তিনি খ্যাতির আলোয় আসেন।
কাজ, খ্যাতি, ক্ষমতা, অর্থ সব থাকার পর তিনি মনের মানুষ না পাওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবেন না বলে ঠিক করে নেন। কিন্তু বিয়ের সঙ্গে তো মাতৃত্বের কোনও যোগ নেই। সেটা একটা অনুভূতি। দায়িত্ব। আর সেই জন্যই মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি মা হওয়ার সিদ্বান্ত নেন। ২০০০ সালে তিনি তাঁর প্রথম সন্তান রেনে সেনকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সম্প্রতি তাঁর এই অভিজ্ঞতার বিষয়ে কথা বললেন অভিনেত্রী। হিউম্যানস অব বম্বেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ২৪ বছর বয়সে সন্তান দত্তক নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানালেন। তাঁর কথায়, 'কেউ মা হতে চায়, কেউ আবার মা-কে চায়। ব্যাপারটা তো ঠিক এতটাই সহজ। এই দূরত্বটা মিটে গেলেই হয়। এটা কেউ কেন সহজ ভাবে বোঝে না জানি না। আমি যেহেতু দীর্ঘদিন বাচ্চাদের সঙ্গে কাটিয়েছি আমি তাই জানতাম আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত এই দায়িত্ব নিতে।'
তবে অভিনেত্রীর মা নাকি একদমই রাজি ছিলেন না তাঁর এই সিদ্ধান্তে। তাঁর মা শুভ্রা সেন নাকি বেশ সন্দিহান ছিলেন তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কারণ তাঁর মতে সুস্মিতা নিজেই তখন ছোট, তিনি করে এই শিশুকে সামলাবেন। যদিও তাঁর বাবা নাকি তাঁকে সমর্থন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: মিস ইউনিভার্স হওয়ার ২৯ বছর! কোন কথা ভেবে এখনও চোখে জল আসে সুস্মিতার
এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, 'আমার মা তখন একটাই কথা বলেছিল তুমি নিজেই এত ছোট, তুমি কী বলছ জানো? মাথাটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে তোমার। আমার উপর মা খুব রেগে গিয়েছিল। যদিও বাবা খুব শান্ত ছিল তখন। সে খালি জানতে চেয়েছিল এই ভাবনাটা আমার মাথায় এল কী করে? আমি বলেছিলাম আমি ভিতর থেকে এই অনুভূতিটা পাচ্ছি। আমি বাবাকে বলেছিলাম আমি আগে একটা সন্তান চাই।'
সুস্মিতা আরও জানান তাঁর বাবার জন্যই নাকি কোর্ট তাঁর কাছে রেনেকে দিয়েছে। তাঁর বাবাই তাঁর জন্য হয়ে সইসাবুদ করেন।
প্রসঙ্গত অভিনেত্রীকে শেষবার তালি ছবিতে দেখা গিয়েছে। এখানে তিনি তৃতীয় লিঙ্গের একজন হয়ে ধরা দিয়েছেন, বলা ভালো রূপান্তরকামী অ্যাক্টিভিস্ট শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।