অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন বর্তমানে তাঁর ওয়েব সিরিজের প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। এই ওয়েব সিরিজ ‘আরিয়া’র কাজ চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। তিনি জানান, হার্ট অ্যাটাকের মাত্র ছয় মাস আগে তাঁর মেডিক্যাল রিপোর্ট সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল। এর সঙ্গে তিনি তাঁর অটোইমিউন সমস্যা সম্পর্কেও বিস্তারিত কথা বলেছেন।
সুস্মিতা সেন একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি একটি অটোইমিউন রোগে ভুগছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার অটোইমিউন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আমি অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ব্রেন ফগ। আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করতাম, আপনার নাম কী? এবং তার দুই সেকেন্ড পরে আমি সেি ভুলে যেতাম। আপনাকে আবার জিজ্ঞাসা করতাম, আপনার নাম কী? আমি দুঃখিত, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে এটা এমন অবস্থা ছিল যা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছিল। কারণ হঠাৎ করে সজাগ ও সচেতন থাকার শক্তি আমার ছিল না।’
(আরও পড়ুন: 'প্রস্তুতি চলছে...' মায়ের দেখানো পথে হেঁটেই বলিউডে পা রাখছেন রেনে! কোন ছবিতে দেখা যাবে সুস্মিতা কন্যাকে?)
হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সুস্মিতা বলেছেন, কীভাবে তিনি তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। কারণ তার বাবা-মাও হার্টের রোগী। হার্ট অ্যাটাকের ৬ মাস আগে পর্যন্ত তাঁর রিপোর্ট ভালো ছিল বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন যে তিনি এনজিয়োপ্লাস্টির সময় অপারেশন থিয়েটারে হাসছিলেন।
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি এমন একজন ব্যক্তি, যে সব সময়ে জীবন উদযাপন করে। আমি সব সময় সুখী ছিলাম। এটি সত্যিই আমাকে এই সমস্যাটি মোকাবেলা করতে সাহায্য করেছে। কারণ আমি অপারেশন টেবিলেও হাসছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আমি আমার চিকিৎসকের সঙ্গে মজা করছিলাম। টের পাচ্ছিলাম অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা হচ্ছে এবং সত্যিই সময়টা ভালো ভাবে কেটে গিয়েছে।’
(আরও পড়ুন: 'ঘর থেকে পেট ভরে খেয়ে যাও যাতে...' ইভেন্টে গিয়ে আধপেটা খেয়ে থাকতে হয়! কেন এমনটা বললেন সুস্মিতা?)
সুস্মিতার এই কথার পরেই আলোচনায় আভার ফিরেছে অটোইমিউন ডিজিজ। এমনীক হালে অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভুও তাঁর এই একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন।
অটোইমিউন ডিজিজ কী?
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের রোগ থেকে রক্ষা করতে কাজ করে। আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম শরীরে প্রবেশ করা কোনও বাইরের পদার্থের বিরুদ্ধে লড়াই করে, কিন্তু কখনও কখনও এটি ভুলবশত শরীরের নিজস্ব কোষকেও আক্রমণ করে, এই অবস্থাকে অটোইমিউন ডিজিজ বলা হয়।
কিছু কিছু রোগ আছে, যার উপসর্গ শরীরে থাকলেও রোগী তা উপেক্ষা করে যান। সমস্যাটি খতিয়ে দেখে বোঝা যায় যে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন এবং তিনি এটিকে অব্যাহতভাবে উপেক্ষা করে আসছেন। এটি অটোইমিউন রোগের কারণে ঘটে। আসুন জেনে নিই, এই রোগের উপসর্গ কী এবং কীভাবে চিকিৎসা করা যায়।
প্রতিটি অটোইমিউন রোগের লক্ষণগুলি যে অঙ্গকে প্রভাবিত করছে তার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। সমস্ত অটোইমিউন রোগের কিছু উপসর্গও থাকতে পারে যেমন জয়েন্টগুলোতে ব্যথা এবং ফোলাভাব, ক্লান্তি, জ্বর, ফুসকুড়ি, অস্থিরতা। এই রোগের লক্ষণ শৈশব এবং যৌবন বা বৃদ্ধ বয়সেও দেখা দিতে পারে।
অটোইমিউন রোগের ঝুঁকি কাদের বেশি?
অটোইমিউন রোগে বংশগতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবারের কারও যদি কোনও ধরনের অটোইমিউন রোগ থাকে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মেরও এই ধরনের রোগ হতে পারে। জেনেটিক কারণের পাশাপাশি পরিবেশগত কারণগুলিও এই রোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি।
কীভাবে অটোইমিউন রোগ সনাক্ত করা সম্ভব?
অটোইমিউন রোগ নির্ণয় করার জন্য, চিকিৎসকদের রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসা ইতিহাস জানতে হয়। শারীরিক পরীক্ষা করা হয় এবং রক্তে অটোঅ্যান্টিবডি সনাক্ত করার জন্য রক্ত পরীক্ষাও করা হয়।