৩০ জুন মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের শিবপুর। মুক্তির আগে থেকেই বিতর্কে রয়েছে এই সিনেমা। ছবির পরিচালকের সঙ্গে প্রযোজকের ঝামেলা, অভিনেত্রী স্বস্তিকাকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠা প্রযোজকদের উপর, নানা কারণে বারবার খবরের শিরোনামে এসেছে শিবপুর। তবুও হলে লোক ভিড় করে এসেছে ছবিখানা দেখতে। স্বস্তিকা-পরমব্রতর মতো টলিউডের দুই পাকা অভিনেতার উপস্থিতি যেখানে রয়েছে, সে ছবি মিস করার মতো ঝুঁকি নিতে চাননি অনেকেই।
ছবি মুক্তির প্রায় সপ্তাহখানেক পর একটি পোস্ট এল স্বস্তিকার থেকে। বলে রাখা ভালো, ছবির প্রচারে অংশ নেননি অভিনেত্রী। প্রযোজকের কাছ থেকে আসা যৌন হুমকিমূলক ইমেলের কারণে থাকেননি ট্রেলার লঞ্চ ইভেন্ট কিংবা প্রিমিয়ারেও।
বৃহস্পতিবার শিবপুরের সমালোচনা করে স্বস্তিকা ফেসবুকে লিখলেন,‘কীভাবে পরিচালক আর প্রযোজকের একটা ছবির চোদ্দটা বাজতে পারে শিবপুর তার জ্বলন্ত উদাহরণ। পরিচালক বাদ পড়লেন। প্রযোজক অজন্তা সিংহ রায় কোথা থেকে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হয়ে গেলেন। একদিন শ্যুটিংয়ে এসেছিলেন কেক কাটতে, ছবির শেষ দিনে। ছবির শেষ দিনে। তিনিও একটা গাল ভরা টাইটেল পেয়ে গেলেন। টাকা লাগিয়েছেন যখন, যা ইচ্ছে করাই যায়।’
শ্যুটিং পরবর্তী সময়েই ট্রেলার লঞ্চের আগে দিয়ে পরিচালক আর প্রযোজকের মধ্যে ঝামেলা লাগে। ‘আমি জানি না এডিটিংয়ের সময় কে শট বেছে দিয়েছে। জানি না এডিটর আদৌ আলোচনার কোনও সুযোগ পেয়েছেন নাকি পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার। আমি এটাও জানি না কে জানে! আমি শুধু জানি যে কয়েকশো শট নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে গুটিকয়েক ব্যবহৃত হয়েছে। এত শক্তিশালী স্ক্রিপ্ট, এত পাওয়ার প্যাকড অভিনয়, এত দুর্দান্ত ক্যামেরার পর কোথা থেকে কী হয়ে গেল জানি না। নতুন প্রযোজকরা নিশ্চয়ই আসবেন। পরিচালক হয়ে ছবির গুষ্টিপিণ্ডি চটকাবেন। এটাই আশংকাজনক।’, লিখলেন অভিনেত্রী।
সবশেষে জুড়ে দেন, ‘এভাবেই ইগো আমাদের সব কাজ নষ্ট করে দিক। আর এত সুন্দর সৃজনসীলতার সঙ্গে আমাদের সব কাজ নষ্ট করার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।’
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগেই 'শিবপুর' ছবির আরেক প্রযোজক সন্দীপ সরকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ ছিল প্রযোজক সন্দীপ তাঁর কোনও বন্ধুর মেইল আইডি থেকে স্বস্তিকার নগ্ন ছবি অভিনেত্রীকে পাঠান। হুমকি দেওয়া হয়েছিল, প্রযোজকের কথা মতো কাজ না করলে সেই ছবি ভাইরাল করা হবে। আর এরপরই সেই ঘটনা নিয়ে পুলিশের ও ইম্পার দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বস্তিকা। এরপর প্রযোজক অজন্তা দাবি তোলেন, পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্যের ইন্ধনেই নাকি স্বস্তিকা এমন অভিযোগ এনেছেন। শুধু তাই নয়, অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগও এনেছিলেন অজন্তা সিংহ রায়। পরে ছবির প্রিমিয়ারে যান পরিচালক। কিন্তু যৌন হেনস্থার ‘ক্ষমা হয় না’ জানিয়ে উপস্থিত হননি স্বস্তিকা। নিজেই টিকিট কেটে সিনেমাটি দেখেন কাছের বন্ধু ও বাড়ির পরিচারিকাদের সঙ্গে নিয়ে। তারপরেই এ ফেসবুকে এই পোস্ট। তাহলে কি নিজের সিনেমাই মনে ধরল না অভিনেত্রীর?