‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’। এই কথাগুলি হঠাৎ চর্চার কেন্দ্রে। কারণ একের পর এক চাকুরিজীবী এর কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন। হালে চিনে ২৫ বছরের এক আইটি কর্মীর মৃত্যু বিষয়টির প্রতি আবার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
কি এই ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’?
প্রতি দিন সকাল ৯টা থেকে কাজ শুরু করতে হবে। কাজ শেষ হবে রাত ৯টায়। এই ভাবে কাজ করতে হবে সপ্তাহে ৬ দিন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টার কাজ। আর এটিকেই বলা হচ্ছে ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’। এই মারাত্মক পরিমাণে কাজের চাপ শরীর এবং মনের উপর প্রভাব ফেলছিল, তা পরিষ্কার। কিন্তু বিষয়টি যে প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে, তার প্রমাণ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা।
কী ঘটেছে এবার?
সম্প্রতি চিনে এক ২৫ বছরের তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার তিনি তাঁর বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। টানা ৬ দিন ধরে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করছিলেন তিনি। এভাবে গত এক সপ্তাহ কাজ করেছেন। এটি ছিল তাঁর সাপ্তাহিক কাজের ষষ্ঠ দিন। বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করতে করতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গেলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী এই তরুণের মূল কাজ ছিল লেখালিখির। আর সেটিই তিনি করে আসছিলেন বেশ কয়েক বছর ধরে। কোনও ওভারটাইম নয়, অফিসের কাজের নির্ধারিত সময় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা কাজ করেছেন তিনি। তাতেই এই কাণ্ড।
কেন মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা?
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত কাজের চাপের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল তাঁর। আর তাতেই মৃত্যু হয়েছে এই তরুণের। তিনিই প্রথম নন, ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’র কারণে এর আগেও বেশ কয়েক জন চাকুরিজীবীর মৃত্যু হয়েছে সে দেশে।
এই ঘটনার পরে বিরাট সমালোচনা শুরু হয়েছে এই ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’ নিয়ে। নেটদুনিয়ায় একের পর এক সমালোচনার ঢেউ উঠছে। বেশ কিছু স্বাধীন ব্লগার এর প্রতিবাদ শুরু করেছেন। তবে এই ‘৯৯৬ সংস্কৃতি’ বা ‘৯৯৬ কাজের সময় পদ্ধতি’ বন্ধ করা হবে কি না, সে প্রসঙ্গে এখনও কোনও কথা বলেনি চিনের সরকার।