আধুনিক পৃথিবীর তলায় চাপা পড়ে আছে এক প্রাচীন পৃথিবী। আপাতভাবে দেখা না গেলেও বিস্ময়কর পৃথিবী ঐতিহাসিক বহু কিছুরই অস্তিত্ব জানান দেয় বারংবার। আমাজনের গভীর জঙ্গলে ২০০০ বছরেরও বেশি পুরনো একটি শহরের সন্ধান মিলল এবার। এত প্রাচীন কোনও শহর থাকতে পারে আমাজনের গহীন অরণ্যে, তা ভাবনাতেও আসেনি। সম্প্রতি ত্রিমাত্রিক ছবিতে পুরনো শহরের এই অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। সড়কপথে ও ছোট ছোট খালের মাধ্যমে অন্য বড় শহরগুলির সঙ্গেই শহরটি যুক্ত ছিল বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। দু’হাজার বছরের পুরনো এই শহরটি মূলত ছিল কৃষি সভ্যতা ভিত্তিক, এমনই দাবি প্রত্নতত্ত্ববিদদের। তারা জানাচ্ছেন, এই শহরেই বসবাস করতেন প্রায় দশ হাজারের কাছাকাছি মানুষ।
প্রাচীন লাতিন আমেরিকার নগর সভ্যতার আদল খুঁজে পাচ্ছেন তারা। প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করছেন কৃষিকাজই ছিল এই শহরের বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা। দোকান-বাজার, মাঠ নানান কিছুরই অস্তিত্ব মিলেছে নতুন করে আবিষ্কৃত এই শহরে। আধুনিক লেজার সেন্সর প্রযুক্তির সাহায্যে ইকুয়েডরের পূর্বে, আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশে উপানো উপত্যকা অঞ্চলে এই হারিয়ে যাওয়া শহরটি আবিষ্কৃত হয়েছে, যার আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি। শহরের আয়তন দেখে ঐতিহাসিকদের অনুমান ১৫ থেকে ২৫ হাজার মানুষের বসবাস ছিল সেই সময়কার এই জনপদে।
এর আগেও এই আমাজন অঞ্চলে বেশ কিছু পিরামিড এবং স্থাপত্যের নিদর্শন মিলেছে, যা আমাজন অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক ইতিহাসকে জানতে সাহায্য করবে। নৃতত্ববিদরা জানাচ্ছেন, এই সভ্যতা কিলামপে ও উপানো সংস্কৃতিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল। তবে পরবর্তীতে হুয়াপুলা সংস্কৃতি এই নগর সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছিল। যাইহোক গবেষকরা বিস্মিত হয়েছেন এই শহরের রাস্তাঘাট কিংবা নিকাশি ব্যবস্থা নকশা দেখে। মাটির টিলার উপর মিলেছে আবাস কক্ষ এবং ঘর বাড়িও। এই শহরের অধিকাংশ জায়গা জুড়েই ছিল কৃষিক্ষেত্র। গবেষকরা মনে করছেন, এই অঞ্চল একসময় ১০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ বসবাস করতেন।