করোনাভাইরাস লকডাউনের মধ্যে চেয়েছিলেন ‘বুলেট নেওয়ার অনুমতি’। ‘পুরোপুরি শান্তির মধ্যে নিজেকে স্বেচ্ছায় উৎসর্গ করতে’ চেয়েছিলেন। মাস ছয়েক আগেই রীতিমাফিক বিয়ের অনুমতি চেয়ে সেই মজাদার চিঠি লিখেছিলেন কমান্ডার নিশান্ত সিং।
কিন্তু দু'দিন ধরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার আইএনএস বিক্রমাদিত্য থেকে মিগ-২৯কে ট্রেনার বিমান নিয়ে উড়েছিলেন কমান্ডার নিশান্ত। রুটিন চক্করের সময় তা আরব সাগরে ভেঙে পড়েছিল। সেদিনই এক পাইলটকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও খোঁজ মিলছে না কমান্ডার নিশান্তের। সূত্রের খবর, ভরতীয় নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল নিশান্তের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও সাফল্য মেলেনি।
তারইমধ্যে কমান্ডিং অফিসারকে নিজের বিয়ের খবর জানানোর জন্য কমান্ডার নিশান্ত যে চিঠি লিখেছিলেন, তা আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। গত ৯ মে'র সেই চিঠিতে কমান্ডার নিশান্ত লিখেছিলেন, ‘এত কম সময়ের নোটিশে আপনার উপর এই বোমা ফেলায় আমি দুঃখিত। কিন্তু আপনি একমত হবেন যে নিজের উপর একটি পরমাণু বোমা ফেলার বিষয়ে মনস্থ করেছি আমি। যুদ্ধের মুহূর্তে আকাশে আমরা যেমন সেকেন্ডের ভগ্নাংশে সিদ্ধান্ত নিই, ঠিক সেরকমই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ দিতে পারছি না।’
কোর্টশিপের সময়ের সঙ্গে তুলনা করে কমান্ডিং অফিসার জানিয়েছিলেন, তিন বছরের এসসিটিটি (বেঁচে থাকার এবং সামঞ্জস্যতা পরীক্ষার ট্রায়াল) সম্পূর্ণ হওয়ার পর তিনি এবং বাগদত্তা একমত হয়েছেন যে তাঁরা ‘নিজেদের হত্যা না করেই আমরা সত্যিই একসঙ্গে নিজেদের বাকি জীবন পার করে দিতে পারব।’ নিজের কমান্ডিং অফিসারের উদ্দেশে কমান্ডার নিশান্ত লিখেছিলেন, ‘পুরোপুরি লাইন অফ ডিউটির বাইরে এবং আপনাকে ও আরও সাহসী ছেলেদের মতো বিবাহের সর্পিলাকার সমাধিক্ষেত্রে অনুসরণ করতে এবং পুরোপুরি শান্তির মধ্যে নিজেকে স্বেচ্ছায় উৎসর্গ করতে আপনার অনুমতি চাইলাম।’
রীতি অনুযায়ী, বিয়ের জন্য কমান্ডিং অফিসারদের কাছ থেকে তরুণ অফিসার অনুমতি চাইতে হয়। কিন্তু ‘বুলেট নেওয়ার অনুমতি’-র সেই চিঠি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। চিঠির শেষে কমান্ডার নিশান্ত লিখেছিলেন, ‘আগে আপনার ছিলাম, কিন্তু এখন ওর (হবু স্ত্রী'র) অনুগত।’ সেই রসিক চিঠিতে অনুমতি দিয়ে কমান্ডিং অফিসার লিখেছিলেন, ‘তোমার মধ্যে স্ফুলিঙ্গ দেখেছিলাম এবং বরাবর জানতাম যে তুমি আলাদা।’