উত্তরপ্রদেশের বান্দা এলাকার লোখারি মন্দিরে ছিল এক দশম শতকের ছাগমুণ্ড যোগিনী মূর্তি। তাকে অবৈধভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে জল। পেরিয়েছে বহু সময়। তবে খোঁজ মিলছিল না ওই দুর্মূল্য মূর্তির। এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার সদ্য ভিন দেশে উদ্ধার হওয়া ভারতের বিভিন্ন শিল্পকীর্তি গুলিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। আর সেই উদ্যোগের হাত ধরে দেশে ফিরে এল দশম শতকের এই মূর্তি।
এই মূর্তি উদ্ধারের নেপথ্যে রয়েছে, লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসের তৎপরতা। এছাড়াও ইন্ডিয়া প্রাইড প্রজেক্ট, লন্ডনের আর্ট রিকভারি ইন্টারন্যাশনাল, সিঙ্গাপুরের সার্বিক চেষ্টায় ঘরে আসে এই যোগিনী মূর্তি। এই মূর্তি নিয়ে ১৯৮৬ সালে দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামে গবেষণা করছিলেন ভারতীয় গবেষক বিদ্যা দহেজা। তাঁর লেখা বই 'যোগিনী কাল্ট অ্যান্ড টেম্পলস: তান্ত্রিক ট্র্যাডিশন' এ এই মূর্তির উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখ্য, মনে করা হয় যোগিনীরা বিশেষ ধ্যান বলে এক বিশেষ শক্তির অধিকারিনী হয়ে যান। তান্ত্রিক মতে পূজা পদ্ধতির দ্বারা এমনটা হয় বলে কথিত রয়েছে। তাঁদের একটি গোষ্ঠীকে পুজো করা হয়। আর সেই দিক থেকে উদ্ধার হওয়া এই বিশেষ মূর্তির গুরুত্ব অপরিসীম। ছাগমুণ্ড যোগিনী মূর্তির মাথা যেন ছাগলের আকারের। আর দেহ যেন যোগিনীর। এই মূর্তি উদ্ধারের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি একটি টুইটে লেখেন, ' যে শিল্প কীর্তির উপর আমাদের অধিকার রয়েছে তার প্রত্যার্পণ চলছে...মা ভারতীর সভ্যতার ঔজ্জ্বল্যকে বোঝে সরকার।'
১৯৮৮ সালে এই মূর্তি লন্ডনের বাজারে ঘুরপাক খেয়েছে বলে শোনা গিয়েছিল। ২০২১ সালে এই মূর্তি সম্পর্কে জানতে পারে লন্ডনে ভারতের রাষ্ট্রদূতাবাস। এরপর ছাগমুণ্ড এমন যোগিনী মূর্তির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের লোখারির মন্দির থেকে হারিয়ে যাওয়া মূর্তির মিল খোঁজার চেষ্টা করে লন্ডনে অবস্থিত ভারতের হাইকমিশন। এরপর লন্ডনের একটি বাড়ির বাগান থেকে উদ্ধার হয় এমন মূর্তি। এর আগে বৃষাণন যোগিনীর এমন এক মূর্তি প্যারিস থেকে উদ্ধার করে সেখানে অবস্থিত ভারতের দূতাবাস। ওই মূর্তিও উত্তরপ্রদেশের লোখারি গ্রামের মন্দির থেকে চুরি যায় বলে শোনা যায়।