করোনা আক্রান্ত মানুষজনের সেবায় নিজেকে উজাড় করে দিয়ছিল ২৬ বছরের তরুণ পাকিস্তানি চিকিত্সক উসমা রিয়াজ। মহামারী করোনা প্রাণ কেড়ে নিল এই চিকিত্সকের। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিত অঞ্চলে ইরাক-ইরান ফেরত করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সার দায়িত্ব ছিল রিয়াজের উপর। মহামারী করোনা সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে যে সব দেশে তার মধ্যে অন্যতম চিন এবং ইরান। দুটো দেশই পাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া। এখনও পর্যন্ত ভারতের এই প্রতিবেশি রাষ্ট্রে করোনার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন, সংক্রমিত ৮০০ মানুষ।
১০ জন চিকিত্সকদের একটি দলের অংশ ছিলেন রিয়াজ। প্রথমে ইরান ফেরত পাকিস্তানি নাগরিকদের স্ক্রিনিংয়ের দায়িত্ব ছিল সেই দলের উপর। এরপর গিলগিত অঞ্চলের আইসোলেশন সেন্টারে করোনা আক্রান্তদের চিকিত্সা শুরু করেন এই পাক তরুণ ডাক্তার।
পরিবার সূত্রে খবর শুক্রবার আইসোলেশন সেন্টার থেকে ফিরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। দ্রুত তাঁকে মিলিটারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় রিয়াজকে। তবে শেষমেষ রক্ষা করা গেল না রিয়াজের প্রাণ। রবিবার মৃত্যু হয় ২৬ বছরের এই তরুণ চিকিত্সকের।
গিলগিত-বালতিস্তান অঞ্চলের সরকারি মুখপাত্র ফয়জুল্লা ফারুক রিয়াজের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়ছেন, স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন রিয়াজ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই প্রাণ হারাল। অঞ্চলের তথ্য মন্ত্রী শামস মীর জানিয়েছেন, উসমারাই আসল হিরো, যাঁরা অন্যের প্রাণ বাঁচাতে নিজের প্রাণ উত্সর্গ করে।
যদিও করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে নিজেদের প্রথম সদস্যকে হারিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পাকিস্তান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার গিলগিত-বালতিস্তানের সভাপতি জুলফিকার আলি জানিয়েছেন, সরকারের অবহেলার কারণেই COVID-19-এ সংক্রমিত হয়ে প্রাণ গেল রিয়াজের। চিকিত্সকদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার।
চিনের সীমান্ত লাগোয়া উত্তর পাকিস্তানের এই অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত ৫৫ জন করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।