বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > 'কারণ বোধগম্য নয়', EC-কে ভর্ৎসনা করা প্রধান বিচারপতির বদলি নিয়ে প্রশ্ন মাদ্রাজ HC-র আইনজীবীদের

'কারণ বোধগম্য নয়', EC-কে ভর্ৎসনা করা প্রধান বিচারপতির বদলি নিয়ে প্রশ্ন মাদ্রাজ HC-র আইনজীবীদের

মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। (ফাইল ছবি, সৌজন্য পিটিআই)

গত এপ্রিলে দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছিল, 'আজ আমরা যে অবস্থায় রয়েছি, তার জন্য দায়ী একমাত্র আপনাদের প্রতিষ্ঠান (নির্বাচন কমিশন বা ইসি)।

তুলনামূলকভাবে ‘ছোটো’ মেঘালয় হাইকোর্টে বদলি করা হয়ছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামকে চিঠি লিখলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের ৩১ জন বর্ষীয়ান আইনজীবী।

গত ১১ নভেম্বর লেখা চিঠিতে পি এস রামন, নলিনী চিদম্বরম, এন আর এলাঙ্গো (ডিএমকের রাজ্যসভার সাংসদ)-সহ ৩১ জন আইনজীবী দাবি করেছেন, মাদ্রাজ হাইকোর্টে লাগাতার বদলি ও পোস্টিং চলছে। 'রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতে' এত কমদিনের মেয়াদের বিষয়টি ন্যায়বিচার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো নয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এটা শুধু হাইকোর্ট নয়, সকল প্রতিষ্ঠানেই ক্ষেত্রে (এটা প্রয়োজ্য)। হাইকোর্টের ক্ষেত্রে আরও বেশি। কারণ সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হাইকোর্ট উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।’

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। তারইমধ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর সু্প্রিম কোর্টের কলেজিয়াম তাঁর বদলির সুপারিশ করেছিল। সেই সংক্রান্ত নির্দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। ৭৫ বিচারপতি-বিশিষ্ট মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে যে মেঘালয় হাইকোর্টে তাঁকে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে মাত্র তিনজন বিচারপতি আছেন। তারপর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি লেখা হয়েছে। তাতে ২০০-এর বেশি আইনজীবী স্বাক্ষর করেছেন।

এবার ওই ৩১ জন বর্ষীয়ান আইনজীবীর চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আচমকা অন্য একটি আদালতে তাঁর বদলির কারণ অনুধাবন করতে পারছি না আমরা।’ ওই ৩১ জন বর্ষীয়ান আইনজীবীর বক্তব্য, মাদ্রাজ হাইকোর্টে এক বছরও পূর্ণ হয়নি প্রধান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের। করোনাভাইরাস মহামারী সত্ত্বেও সেই স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার মামলার নিষ্পত্তি করেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতির পদের মর্যাদা রক্ষা করেছেন। গত এপ্রিলে দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছিল, 'আজ আমরা যে অবস্থায় রয়েছি, তার জন্য দায়ী একমাত্র আপনাদের প্রতিষ্ঠান (নির্বাচন কমিশন বা ইসি)। কোভিড প্রোটোকল মেনে চলার জন্য আদালতের নির্দেশ থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলি যখন তা না মেনেই প্রচার চালিয়েছেন, তখন আপনারা কোনও পদক্ষেপ করেননি।'

বিচারপতিদের বদলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, শীর্ষ আদালত বলেছিল যে ‘জনস্বার্থ’ এবং ‘বিচারব্যবস্থার ভালো প্রশাসনের’ জন্য বিচারকদের বদলি করা আবশ্যিক। কিন্তু বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির ক্ষেত্রে এরকম কোনও কারণ দেখতে পারছেন তাঁরা। ওই ৩১ জন বর্ষীয়ান আইনজীবীর বক্তব্য, বড় হাইকোর্টে দায়িত্ব পালন করা বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে অধিক মামলা সামলানোর ক্ষেত্রে নিজের ক্ষমতা দেখিয়েছেন। যেরকম পরিস্থিতি মেঘালয় হাইকোর্টে তৈরি হবে না। যা ‘একইরকমভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তা বহরে ছোটো।’

বন্ধ করুন